ক্যালিফোর্নিয়া: সাত বছরের নাবালক ভিনি ডিসাউটেলস প্রথমে ক্যান্সার আক্রান্তদের সম্পর্কে জানতে পারে তার মায়ের কাছে থেকে। মায়ের কাছ থেকে সে জানে ক্যান্সারের চিকিত্সায় কেমোথেরাপির প্রভাবে কীভাবে মাথার সব চুল পড়ে যায় ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের। ভিনির মা পেশায় একজন হেয়ার স্টাইলিস্ট। তিনি ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের সাহায্যের জন্যে যখন বিভিন্ন রকম পদক্ষেপ নিচ্ছেন, তখন ছোট্ট ভিনি মায়ের কাছে একটা আর্জি রাখে। সে জানায়, সে নিজের চুল বড় করে, ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী যাদের চুল সব উঠে গেছে, তাদের চুল দিয়ে সাহায্য করতে চায়।

ছোট্ট ভিনির এই সাহায্যের ইচ্ছেটা মা-বাবা ফেলতেও পারেননি। ছেলের ইচ্ছে মত তাঁরা ভিনিকে চুল বাড়াতে সাহায্য করেন। গত দুবছরে তার মাথায় প্রায় ১৩ ইঞ্চি লম্বা চুল হয়। ভিনির বাবা জানিয়েছেন, এরজন্যে তাঁর ছেলেকে বন্ধু-বান্ধবদের থেকে অনেক ব্যঙ্গ-বিদ্রুপও সহ্য করতে হয়। কিন্তু কিছুতেই দমানো যায়নি ছোট্ট ভিনিকে।

দুবছর বাদে ভিনি তার ১৩ ইঞ্চি লম্বা চুল নিয়ে হাজির হয় মায়ের সেলুনে। তারপর তার মা ছোট্ট ভিনির চুল কেটে খাম করে পাঠিয়ে দেন ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের কাছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেই আনন্দের দিনেই ভিনি তার বাবা-মাকে তার ডান চোখে এক যন্ত্রণার কথা জানায়।যেহেতু সেসময় অ্যালার্জি হচ্ছিল চারিদিকে বাবা-মা পারিবারিক চিকিত্সককে দেখিয়ে চোখের ড্রপ ও বেনাড্রিল দেন। কিন্তু সেই যন্ত্রণাতো কমেইনি, উল্টে চোখ ফুলে যায় ভিনির। তারপর শুরু হয় হাঁটুতে যন্ত্রণা এবং ডান কোমরটা মারাত্মক ফুলে যায় ভিনির। অবশেষে পরীক্ষা করে ধরা পরে ভিনির শ্রোণী হাড়ে একটি টিউমার রয়েছে। মূলত ভিনির ক্যান্সার এখন স্টেজ ফোরে পৌঁছে গেছে জানায় চিকিত্সকেরা।  ভাগ্যের পরিহাসে ক্যান্সার আক্রান্তদের নিজের চুল নিয়ে সাহায্য করে এই সাত বছরের শিশু নিজেই আজ এই মারণ রোগের কোপে। শুরু হয়েছে তাঁর চিকিত্সা, কেমোথেরাপি। ভিনির মা এখন অন্তঃসত্বাও। কিন্তু বাবা-মা দুজনেই এখন হাসপাতালে ভিনির পাশে রয়েছেন, তার এই লড়াইয়ে।