বান্নু: পাকিস্তানে গত ১৯ বছরে প্রথম আদমসুমারি চলছে। তাতেই জানা গেল এই বিস্ফোরক তথ্য। তিনটি লোকের প্রায় ১০০টি সন্তান!

পাকিস্তানে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে জনসংখ্যা। বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই সাবধানবাণী শুনিয়েছেন। যেভাবে জনস্ফীতি ঘটছে, একদিন তা অনেক কঠিন চেষ্টার ফলে অর্জিত সামাজিক, অর্থনৈতিক সাফল্যকে বরবাদ করে দিতে পারে। বিশ্বব্যাঙ্ক আগেই বলেছে, পাকিস্তানে জন্মের হার ঊর্ধ্বমুখী। মহিলা পিছু প্রায় তিনটি সন্তান। সরকারি পরিসংখ্যানেও এটাই বেরিয়ে আসতে চলেছে, জন্মের হার বেশি।

কিন্তু ৩৬টি ছেলেমেয়ের বাবা গুলজার খান বলেছেন, গোটা দুনিয়া, বাচ্চাকাচ্চা ঈশ্বরের সৃষ্টি। তাহলে একটি শিশুর ভূমিষ্ঠ হওয়ার স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় আমি কেন বাধা দেব? উপজাতি অধ্যুষিত উত্তরপশ্চিমে শত্রুতা, বিরোধও জনসংখ্যা বৃদ্ধির একটা কারণ ধরা হয়। ৫৭ বছর বয়সি গুলজার সেখানে তৃতীয় স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন। সেই মহিলা এখন সন্তানসম্ভবা। গুলজার বলেছেন, আমরা সংখ্যায় বড় হতে চেয়েছি। বাচ্চাকাচ্চাদের দেখিয়ে তাঁর দাবি, ওদের ক্রিকেট খেলতে বাইরের বন্ধুর তো দরকার হয় না!

পাকিস্তানে বহুবিবাহ আইনি হলেও বিরল। গুলজারদের মতো পরিবার খুব বেশি নেই, যদিও তাঁর মতোই ভাবনাচিন্তা করে প্রচুর লোক।

১৯৯৮ সালের শেষ জনগণনায় পাকিস্তানের জনসংখ্যা ছিল ১৩ কোটি ৫০ লক্ষ। চলতি সেনসাসের প্রাথমিক ফল বেরতে পারে জুলাইয়ের শেষে। অনুমান, তাতে দেখা যাবে, জনসংখ্যা বেড়ে ২০ কোটি ছুঁয়েছে।

গত মাসেই উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ ৪০ শতাংশ বাড়িয়েছে ইসলামাবাদ। কিন্তু পর্যবেক্ষকদের আশঙ্কা, যে দেশে প্রায় ৬ কোটি মানুষ গরিবি রেখার নীচে পড়ে আছে এবং কাজের সুযোগ কম, সেখানে জনসংখ্যা বাড়তে থাকলে সম্পদের ওপর চাপ পড়বে, মার খাবে উন্নয়ন।

গুলজারের ১৫ সহোদরের একজন মাস্তান খান ওয়াজিরেরও তিন বউ। এপর্যন্ত তিনি বাবা হয়েছেন ২২ জনের। ভাইয়ের মতো তিনিও জানিয়েছেন, অগুনতি নাতি-নাতনী তাঁর। ৭০ বছরের ওয়াজির বলেন, ঈশ্বর সবার জন্য খাদ্য, সম্পদের আয়োজনের ভরসা দিয়েছেন, কিন্তু মানুষ তাঁকে ভরসা কম। উপজাতি অধ্যুষিত নর্থ ওয়াজিরিস্তানে তিনি রীতিমতো সেলেব্রিটি।

বালুচিস্তানের কোয়েটার জান মহম্মদের ৩৮টি সন্তান। পরিবারের জন্য অতীতে সরকারি সাহায্যের আবেদন করেছেন জান। গত বছরেই তিনি ১০০ সন্তানের বাবা হওয়ার স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে চতুর্থ স্ত্রীর সন্ধানে রয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন। যদিও এখনও কোনও মহিলা সম্মত হননি। কিন্তু হাল ছাড়তে নারাজ জান। তাঁর যুক্তি, মুসলিমরা সংখ্যায় যত বাড়বে, শত্রুরা তত ভয় পাবে তাদের। মুসলিমদের আরও সন্তানের জন্ম দিতে হবে।