ওয়াশিংটন ও মস্কো: বিশ্বে কি ফের পরমাণু অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরুর অশনি সঙ্কেত? দায়িত্বগ্রহণের আগেই পরমাণু অস্ত্র নিয়ে হুঙ্কার ছেড়েছেন আমেরিকার নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পিছিয়ে নেই রাশিয়াও। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও দেশের সামরিক বাহিনীকে পরমাণু সক্ষমতা বাড়াতে বলেছেন। এরইমধ্যে রাশিয়াকেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। ভোটের আগে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক  দৃঢ় করার কথা বললেও এখন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এমন কোনও ঘটনা যাতে না ঘটে যার জেরে বিশ্বের দুই প্রথমসারির শক্তিকে ‘বিকল্প পথ’ বেছে নিতে হয়।


গত ১৫ ডিসেম্বর পুতিন চিঠি লিখেছেন ট্রাম্পকে। সেই ‘খুব সুন্দর চিঠি’ ট্রাম্প পাঠিয়েছেন তাঁর ট্রানজিশন টিমের কাছে। চিঠিতে পুতিন দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার পরিকাঠামো পুণঃপ্রতিষ্ঠিত করতে ‘গঠণমূলক ও বাস্তবসম্মতভাবে’ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ট্রাম্পের কাছে আর্জি জানিয়েছেন। চিঠিতে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক  গুরুতর সমস্যাবলীর উল্লেখ করে বলা হয়েছে, আধুনিক বিশ্বে স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে রাশিয়া ও আমেরিকার সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

চিঠির জবাবে ট্রাম্প বলেছেন, পুতিনের এই ধারনার সঙ্গে তিনি সহমত। এই ধারণাকে মাথায় রেখে দুই পক্ষই পথ চলবে এবং এজন্য দুই দেশের বিকল্প পথ গ্রহণের প্রয়োজন হবে না বলে আশা প্রকাশ করেছেন আমেরিকার নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট।

রাশিয়ার পক্ষ থেকে অবশ্য ট্রাম্পকে পুতিনের চিঠি পাঠানোর বিষয়ে কোনও কথা বলা হয়নি।

এরইমধ্যে ট্রাম্প ও পুতিন তাঁদের দেশের পরমাণু অস্ত্র সম্ভার আরও শক্তিশালী  করার কথা বলেছেন। ট্রাম্প পরমাণু অস্ত্র প্রসার সংক্রান্ত বিতর্ক নতুন করে খুঁচিয়ে তুলেছেন। ট্যুইটে তিনি বলেছেন, ‘আমেরিকাকে তার পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার আরও বাড়াতে হবে এবং শক্তিশালী করতে হবে। যত ক্ষণ পর্যন্ত পরমাণু অস্ত্র নিয়ে গোটা দুনিয়ার হুঁশ না ফেরে, তত ক্ষণ পর্যন্ত তা করতে হবে। তাঁর মতে, দুনিয়াজোড়া একটা পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা হওয়া উচিত। তা হলেই বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যাবে’।

পুতিনও চলতি সপ্তাহেই মন্তব্য করেছেন, আগামী বছরগুলিতে রাশিয়ার পরমাণু সক্ষমতা শক্তিশালী করা সামরিক লক্ষ্য হওয়া উচিত।  তিনি  বলেন, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী যে কোনও আক্রমণ মোকাবিলার জন্য শক্তিশালী। তবে স্বীকার করে নিয়েছেন যে, আমেরিকার সামরিক ক্ষমতা অনেক বেশি। মার্কিন ক্ষেপনাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জবাবে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র সম্ভারের আধুনিকীকরণের ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেছেন পুতিন।

ট্রাম্পের গতকালের বক্তব্যকে অবশ্য গুরুত্ব দিতে চাননি পুতিন। তিনি বলেছেন, আমেরিকার নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ীই পরমাণু অস্ত্র শক্তিশালী করার কথা বলা হয়েছে।