ওয়াশিংটন: যে অসহিষ্ণুতার মনগড়া প্রসঙ্গ তুলে মাঝে মধ্যেই মার্কিনীরা ভারতের উদ্দেশে হাহুতাশ করে, এবার তাদের ঘরের মধ্যেই সেই অসহিষ্ণুতার কালো ছায়া। মার্কিন কংগ্রেসের প্রথম হিন্দু সদস্য তুলসি গাবার্ডকে ভোটের আঙিনায় বিপক্ষের রাজনৈতিক মোকাবিলা তো করতেই হচ্ছে, পাশাপাশি জবাবদিহি করতে হচ্ছে, তিনি শয়তানের পুজো করেন কিনা। হাওয়াই থেকে ভোটে দাঁড়ানো, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী তুলসির ধর্মবিশ্বাসের জন্য তাঁকে প্রতি মুহূর্তে কাঠগড়ায় তুলছেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী, রিপাবলিকান প্রার্থী অ্যাঞ্জেলা কাইহু। কাইহুর বক্তব্য, তুলসিকে সমর্থন করা মানে শয়তানের পুজো করা। ভোটারদের উদ্দেশে ফেসবুকে তাঁর প্রশ্ন, খ্রিষ্টানরা বলছে, তুলসি গাবার্ডকে একটা ভোট মানে শয়তানকে ভোট। আপনারা মানেন, না মানেন না? স্থানীয় হিন্দু জনতার অসন্তোষের জেরে সেই পোস্ট অবশ্য এখন ডিলিট করেছেন তিনি।



ভোটের দায় বড় দায়। কাইহুর আচরণের বিরোধিতা করেছে হাওয়াই রিপাবলিকান পার্টিও। মন্তব্য করেছে, তাদের প্রার্থী যেভাবে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর বিরুদ্ধে নীচ, জাতিবিদ্বেষী ও ধর্মীয় অসহিষ্ণু হামলা চালিয়েছেন, তা আপত্তিকর, লজ্জাজনক ও রাজনৈতিক ভাব বিনিময়ের ক্ষেত্রে কোনওমতেই মেনে নেওয়া যায় না।

কাইহু অবশ্য কোনওমতেই তাঁর অবস্থান থেকে সরে আসতে রাজি নন। উল্টে দলীয় প্রধানকে আক্রমণ করে কাইহুর হুঁশিয়ারি, তাঁর সাবধান হওয়া উচিত, কারণ তিনি মুখ খুলছেন ঈশ্বরের বার্তাবাহকের বিরুদ্ধে।

আমেরিকার হিন্দু এডুকেশন ফাউন্ডেশন মন্তব্য করেছে, এই ঘটনা পরিষ্কার দেখিয়ে দিচ্ছে, আমেরিকার বাসিন্দাদের মধ্যে হিন্দুফোবিয়া ও ধর্মীয় বিদ্বেষ কতটা গেড়ে বসেছে। এই ২০১৬-তেও শুধু ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে তুলসি গাবার্ডকে যেভাবে নীচুস্তরের আক্রমণ সইতে হচ্ছে, তাতে স্পষ্ট, নিজস্ব  ধর্মবিশ্বাস পালনের ব্যাপারে মার্কিন সংবিধানে স্পষ্ট বক্তব্য থাকলেও ধর্মীয় একচোখোমি ও পক্ষপাত কীভাবে জেঁকে বসেছে মার্কিনদের মধ্যে।