ইস্তানবুল: সেনা অভ্যুত্থানের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর তুরস্কে এখন চলছে দোষারোপের পালা। রবিবার বেশ কয়েকজন সেনা জেনারেলকে বন্দি করা হয়েছে, বাদ পড়েননি বরিষ্ঠ বিচারক ও আইনজীবীরাও। অভিযোগ, এঁরা সকলে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এর্দোগানকে সরানোর ষড়যন্ত্র করেছিলেন।


এর্দোগান সরকার নিজেই স্বীকার করেছে, অন্তত ৩০০০ সেনাকে এই সন্দেহে গ্রেফতার করেছে তারা। ধরা হয়েছে ৩৪জন জেনারেলকে। সেনা ছাউনিতে ছাউনিতে তল্লাশি চলছে, দেখা হচ্ছে, অভ্যুত্থানের কোনও সমর্থক লুকিয়ে আছেন কিনা। রবিবার ভোরে দেনিজলি শহরের সেনা ছাউনি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে সেনা কম্যান্ডার ওজহান ওজবাকির সহ ৫২জন সেনাকে। শুধু যে সেনাকর্মীদের ওপরেই নির্মম অত্যাচার চলছে তা নয়, দেশজুড়ে ২,৪৭৫জন বিচারক ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে জারি হয়েছে গ্রেফতারি পরোয়ানা। মনে করা হচ্ছে, আমেরিকায় আশ্রয় নেওয়া যে ধর্মগুরু, ফেথুল্লাহ গুলেনের পরামর্শে এই অভ্যুত্থান হয় বলে এর্দোগান সরকার দাবি করছে, তাঁর নির্দেশ মেনে চলতেন এঁরা। যদিও ওই ধর্মগুরু এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তুরস্ক সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, আইনের সীমালঙ্ঘন না করতে। তবে তুরস্কের সেনা অভ্যুত্থানে আমেরিকার হাত ছিল বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা উড়িয়ে দিয়েছে ওয়াশিংটন। মার্কিন বিদেশ সচিব জন কেরি মন্তব্য করেছেন, এ ধরনের অভিযোগ করে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। সেনা অভ্যুত্থানে কাদের হাত ছিল, তার তদন্তে আমেরিকা তুরস্ককে সাহায্য করার ইচ্ছেপ্রকাশ করেছে। যদিও একইসঙ্গে মার্কিন নাগরিকদের প্রতি সাবধানবাণী জারি করে ওযাশিংটন জানিয়েছে, সাম্প্রতিককালে তুরস্ক জুড়ে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির চোখে পড়ার মত বাড়বাড়ন্ত হয়েছে, এই সময় ও দেশে না যাওয়াই উচিত।

এদিকে তুরস্ক সরকার ঘোষণা করেছে, ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের দিনটি অর্থাৎ ১৫ জুলাই 'গণতন্ত্রের উৎসব দিবস' হিসেবে প্রতি বছর পালন করা হবে।