ইস্তানবুল: যৌন অপরাধের জন্য তুরস্কের এক ধর্মীয় নেতার কঠোর  সাজা। আর সাজা হল ১০৭৫ বছরের কারাদণ্ড। সাজাপ্রাপ্তর নাম আদনান ওকটার। তাঁকে ইস্তানবুলের এক আদালত দশটি ভিন্ন ভিন্ন অপরাধের জন্য এই দণ্ড দিয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এমনটাই জানিয়েছে। ২০১৮-তে দেশজুড়ে তল্লাশিতে আদনানের কয়েক ডজন অনুগামীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। জানা গিয়েছে,  তিনি  মহিলাদের সম্পর্কে গোঁড়া মনোভাব পোষণের উপদেশ দিতেন অনুরাগীদের। সেইসঙ্গে তাঁর সঙ্গে থাকা মহিলাদের ‘বিড়াল’ বলতেন। ২০১৮-য় তাঁকেই গ্রেফতার করেছিল ইস্তানবুল পুলিশ।


একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদন অনুসারে, আদনানকে টিভি শো-তে মহিলাদের সঙ্গে দেখা যেত। ওই মহিলাদের প্লাস্টিক সার্জারি করা হয়েছিল। আদনানের বিরুদ্ধে যৌন অপরাধ, নাবালিকাদের যৌন নিগ্রহ, প্রতারণা এবং রাজনৈতিক তথা সেনা সংক্রান্ত গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। এই মামলায় ৭৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

এই ধর্মগুরু গত বছরের ডিসেম্বরে শুনানির সময় বিচারককে বলেছিলেন যে, তাঁর প্রায় হাজার খানেক গার্লফ্রেন্ড আছে। তিনি আরও বলেছিলেন, মহিলাদের প্রতি তাঁর হৃদয়ে প্রেম উপচে পড়ছে। প্রেম মানুষের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। । অন্য এক প্রশ্নের জবাবে আদনান বলেছিলেন, তাঁর বাবা হওয়ার দারুণ ক্ষমতা রয়েছে। আদালতে  শুনানিতে এক মহিলা জানিয়েছিলেন যে, তাঁর তো বটেই, আরও অনেক মহিলাকে একাধিকবার যৌন নিগ্রহ  করেছেন আদনান।

আদনানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বেশ কয়েকজন মহিলাকে তিনি ধর্ষণ  এবং তাঁদের গর্ভনিরোধক ওষুধ খেতে বাধ্য করেন। আদনানের বাড়িতে পাওয়া গিয়েছিল ৬৯ হাজার গর্ভনিরোধক ট্যাবলেট। এ ব্যাপারে অবশ্য সাফাই দিয়ে আদনান বলেছিলেন, মহিলাদের ঋতুচক্র সংক্রান্ত রোগ ও চর্ম রোগের চিকিৎসায় তিনি এগুলির ব্যবহার করতেন।

১৯৯০-এর দশকেই আদনানের নাম শোনা গিয়েছিল। ওই সময় তিনি ছিলেন একটি গোষ্ঠীর নেতা এবং তখনও একাধিক যৌন কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়ে গিয়েছিল।

২০১১-তে তাঁর অনলাইন টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচার শুরু হয়। এর তীব্র নিন্দা করেছিলেন তুরস্কের ধর্মীয় নেতারা।