লন্ডন: ব্রিটেনে আশ্রয় পেলেন মালদ্বীপের অপসারিত প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাশিদ। তাঁর আইনজীবী এ কথা জানিয়েছেন, যদিও ব্রিটিশ সরকার এ ব্যাপারে এখনও মন্তব্য করেনি। জানুয়ারি মাস থেকে ব্রিটেনে রয়েছেন প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত মালদ্বীপের এই প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট।


ভারতবন্ধু বলে পরিচিত নাশিদ ২০০৮ সালে প্রেসিডেন্ট হন স্বৈরতন্ত্রী শাসক মায়ুম আবদুল গায়ুমের তিন দশকের শাসনে ইতি টেনে। কিন্তু চার বছর পর গায়ুমের সক্রিয় মদতে মালদ্বীপ সেনা ও পুলিশ প্রশাসন আচমকা এক অভ্যুত্থানে গদি থেকে সরিয়ে দেয় তাঁকে। আদালতের দ্বারস্থ হয়েও শাসনভার ফেরত পাননি নাশিদ, উল্টে তাঁকে জেলে পুরে দেওয়া হয়। অভিযোগ ওঠে, বেআইনিভাবে এক বিচারককে জেলের সাজা দিয়েছিলেন তিনি। এরপরেই তাঁর ঘাড়ে দেশে সন্ত্রাসবাদী কাজকর্ম চালানোর দায় চাপিয়ে ১৩ বছরের জন্য কারাদণ্ড দেওয়া হয় তাঁকে। রাষ্ট্রপুঞ্জ সহ আন্তর্জাতিক মঞ্চে নাশিদকে এইভাবে শাস্তি দেওয়ার জন্য রীতিমত ধিক্কৃত হয় মালদ্বীপ সরকার। তাঁর জন্য আদালতে সওয়াল করে আন্তর্জাতিক আইনজীবীদের একটি দল, যাঁদের মধ্যে রযেছেন নামী আইনজীবী ও অভিনেতা জর্জ ক্লুনির স্ত্রী আমাল ক্লুনি।

এ বছর জানুয়ারিতে ভারত, ব্রিটেন ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে স্বাক্ষরিত এক চুক্তির ফলে মেরুদণ্ডে অস্ত্রোপচারের জন্য ব্রিটেনে যাওয়ার ছাড়পত্র পান তিনি। লন্ডনে এলে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন তাঁকে লাল কার্পেটে স্বাগত জানান। অস্ত্রোপচারের পর তাঁর মালদ্বীপ ফিরে যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু আর ফেরেননি নাশিদ।

ব্রিটেন থেকে এক বিবৃতিতে নাশিদ বলেছেন, মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাই হোক বা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা- গত কয়েক বছরে মালদ্বীপের মানুষের কাছ থেকে সবই কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ফলে দ্বীপান্তরে থেকে কাজ করা ছাড়া বিরোধী রাজনীতিকদের সামনে আর উপায় নেই।

মালদ্বীপ সরকার অবশ্য নাশিদকে এভাবে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ায় ব্রিটিশ প্রশাসনের কড়া সমালোচনা করেছে। পেনশন ও চিকিৎসা বীমা সংক্রান্ত সুযোগ সুবিধেও কেড়ে নেওয়া হয়েছে নাশিদের কাছ থেকে।