নয়া দিল্লি: একটি যুদ্ধের জের যে কী হতে পারে, তা এখন দেখছে গোটা বিশ্ব। পরিণতি যে কী হতে চলেছে এখন কেবল সেই আশঙ্কা চতুর্দিকে। এরই মধ্যে উঠে এল এক মর্মস্পর্শী দৃশ্য। দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া থেকে স্লোভাকিয়া এল এক ১১ বছর বয়সি ছেলে। সম্বল বলতে একটি ব্যাকপ্যাক, পাসপোর্ট আর হাতে লেখা কিছু ফোন নম্বর। 


স্লোভাকিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, সীমান্তে যখন ১১ বছরের একটি ছেলেকে একা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তখন কিছুটা অবাক হয় সেনারা। সৌভাগ্যক্রমে ছেলেটির হাতে লেখা কিছু ফোন নম্বর ছিল। পাসপোর্টের ভিতরে ভাঁজ করা একটি কাগজে তথ্য ছিল। তার সাহায্যে স্লোভাকিয়ায় তাঁর আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সাহায্য করেছিল, সংবাদসংস্থা সিএনএন-এর রিপোর্ট সূত্রে তা জানা গিয়েছে। বলা হয়েছে, "ছেলেকে একাই এসেছিল কারণ তাঁর বাবা-মাকে ইউক্রেনে থাকতে হয়েছিল। সীমান্তের স্বেচ্ছাসেবকরা তাঁকে আলাদা করে নিয়ে যান এবং খাওয়ার ও গরম পোশাকও দেন। বালকের হাসি ও নির্ভীক মনোভাব সকলের মন জয়ে করেছিল।"                                                           


তবে ছেলেটি কেন একা একা সীমান্তে পাড়ি দিয়েছিলেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। ছেলেটির এই যাত্রা ফের ইউক্রেনে রাশিয়ান আক্রমণের হৃদয়বিদারক দিকটি তুলে ধরে। সংবাদ সংস্থা এপি-র রিপোর্টে উল্লেখ, যুদ্ধের ১১ দিনেই ইউক্রেন ছেড়ে প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নিয়েছেন ১৫ লক্ষ মানুষ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবথেকে বড় মানব সঙ্কট, রিপোর্টে দাবি সংবাদসংস্থা এপি-র।


সার্বিয়ার বেলগ্রেডে ইউক্রেন যুদ্ধের বিরোধিতায় মিছিল। প্রতিবাদে সামিল বেলগ্রেডের রুশ নাগরিকরা। নিজেদের রুশ পাসপোর্ট পুড়িয়ে ফেলতেও দেখা যায়। প্রাণ বাঁচাতে হাঙ্গেরিতে পালিয়ে এসেছেন ইউক্রেনের বহু অর্কেস্ট্রা শিল্পী। অন্যদিকে, রাশিয়ায় যুদ্ধবিরোধী মিছিল করায় ৪ হাজার ৩০০ জনকে আটক করা হয়েছে।                                          


এদিকে, একনাগাড়ে সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া (Russia)। যুদ্ধের আতঙ্কে অনেকে দেশ ছেড়েছেন। অনেকে রয়ে গেছেন দেশেই। এদিকে টানা হামলার জেরে ব্যাপক ক্ষতির মুখে ইউক্রেন (Ukraine)। আগামীদিনে খাদ্য-সঙ্কটের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে একাধিক ফুড প্রোডাক্টের সরবরাহ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউক্রেন।


ইউক্রেন সরকারের বিবৃতি অনুযায়ী, মাংস, ওটস, চিনি, নুন, বাজরা, জোয়ার, ভুট্টার মতো সামগ্রী রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে, গম, পোলট্রি, ডিম, তেল- ইত্যাদি অর্থ মন্ত্রকের অনুমোদন সাপেক্ষে রফতানি করা যাবে।  প্রসঙ্গত, আমেরিকার সংবাদ মাধ্যম অনুযায়ী, ইউক্রেনের বিভিন্ন সুপার মার্কেটে সামগ্রীর অভাব দেখা দিয়েছে। কারণ, যুদ্ধের জেরে সাপ্লাই রুট কঠিন হয়ে গেছে।