কিভ: ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তাঁদের দেশ ন্যাটোর সদস্যপদ নিয়ে কোনও জোরাজুরি করছে না। উল্লেখ্য, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধের (Ukraine Russia War) অন্যতম একটা বড় কারণ, ইউক্রেনের ন্যাটোর সদস্য হতে চাওয়া। রাশিয়া এই উদ্যোগের তীব্র বিরোধিতা করে চাপ বাড়িয়েছিল।  মস্কোতে সন্তুষ্ট করতে জেলেনস্কি বলেছেন, ন্যাটোর সদস্য পদ পেতে আগ্রহী নন। একইসঙ্গে বলেছেন, দেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী দুই রুশ অধ্যুষিত এলাকার পরিস্থিতি নিয়েও তিনি সমঝোতার পথে হাঁটতে প্রস্তুত। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন অভিযানের আগে এই দুটি অঞ্চলকে স্বাধীন ঘোষণা করে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।


সোমবার রাতে একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে যে প্রশ্ন ছিল, তার উত্তর কী হবে তা বুঝেছি যে, ন্যাটো ইউক্রেনকে সদস্য হিসেবে গ্রহণ করতে রাজি নয়। এই সামরিক জোট বিতর্কিত বিষয়াবলী ও রাশিয়ার সঙ্গে সংঘর্ষ নিয়ে ভীত। 


ন্যাটোর সদস্য পদলাভের দাবি থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিয়ে জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি এমন কোনও দেশের প্রধান হতে রাজি নন, যে নতজানু হয়ে কোনও কিছুর জন্য ভিক্ষে করবে। 


রাশিয়া বলে এসেছে যে, তাদের দেশ সংলগ্ন ইউক্রেনের ন্যাটো-তে সামিল হওয়ার প্রয়োজন নেই। ঠাণ্ডা যুদ্ধের পরবর্তী পর্বে সোভিয়েত ইউনিয়নের থেকে ইউরোপের সুরক্ষা কবচ হিসেবে বিভিন্ন দেশের মধ্যে এই জোট গড়ে উঠেছিল। বিগত কয়েক বছরে ইউরোপের পূর্বে আরও সম্প্রসারিত হয়েছে পূর্বতন সোভিয়েত জোটভূক্ত দেশগুলিকে সামিল করার জন্য। ন্যাটো-র এই বিস্তারকে বিপদ হিসেবে বিবেচনা করে রাশিয়া। পশ্চিমী জোটগুলি তাদের দোরগোড়ায় নিশ্বাস ফেলবে, এটা একেবারেই পছন্দ নয় রাশিয়ার। 


উল্লেখ্য, ইউক্রেনের ডোনেস্ক ও লুগানস্ক-এই দুটি রুশ সমর্থনপুষ্ট স্বায়ত্তশাসিত  এলাকাকে স্বাধীন হিসেবে ঘোষণা করে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন পুতিন। ২০১৪ থেকে ওই দুটি অঞ্চলের সঙ্গে কিয়েভের সংঘাত শুরু হয়েছিল। এখন রাশিয়া চায়, ইউক্রেনও যেন এই দুই অঞ্চলকে স্বাধীন ও সার্বভৌম হিসেবে ঘোষণা করে। এ ব্যাপারে প্রশ্নের উত্তরে জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় রাজি। এক্ষেত্রে ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংক্রান্ত নিশ্চয়তার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে।  তিনি বলেছেন, ওই দুটি অঞ্চলকে রাশিয়া ছাড়া আর কেউ স্বীকৃতি দেয়নি। ওই দুটি তথাকথিত প্রজাতন্ত্র কীভাবে টিকে থাকবে, তা নিয়ে আলোচনা করে একটা সমঝোতা সূত্র বের করা যেতে পারে। জেলেনস্কি বলেছেন, এ সমস্ত ব্যাপারে পুতিনের উচিত আলোচনা শুরু করা।