ব্রাসেলস: তুরস্ককে হুঁশিয়ারি আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের। দেশে সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর ব্যাপক ধরপাকড় চালাচ্ছে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরডোগানের সরকার। এমনকী অভ্যুত্থানের প্রয়াসে জড়িতদের সাজা দিতে মৃত্যুদণ্ড ফিরিয়ে আনার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে সরকার। সাড়ে সাত হাজারের বেশি লোককে জেলে পোরা হয়েছে। ৯ হাজারের বেশি লোককে বরখাস্ত করেছে তুর্কি সরকার। এমন পরিস্থিতিতে আমেরিকা, ই ইউ তো বটেই, জার্মানিও এরডোগানকে কড়া বার্তা দিয়েছে। আইনের শাসনকে মর্যাদা দিতে হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিদ্রোহীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলে আঙ্কারার ই ইউ-র সদস্যপদ পাওয়ার দীর্ঘদিনের চেষ্টাও বানচাল হয়ে যাবে, এও বলে দিয়েছে তারা।

 

মার্কিন বিদেশ সচিব জন কেরি, ই ইউয়ের বৈদেশিক নীতি বিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মোঘেরিনি ব্রাসেলসে বলেছেন, শুক্রবারের সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টাকে যুক্তি হিসাবে খাড়া করে বাড়াবাড়ি মেনে নেওয়া যায় না। সাংবাদিক সম্মেলনে কেরি বলেছেন, অভ্যুত্থানের চেষ্টায় জড়িতদের বিচার অবশ্যই সমর্থন করি। কিন্তু তার নামে সীমা ছাড়িয়ে গেলে ভাল হবে না, এও জানিয়ে দিতে চাই।

ই ইউ এবং আমেরিকা তুরস্ক সরকারকে দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলি ও আইনের শাসনের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান দেখাতে পরামর্শ দিচ্ছে।

তুরস্কের ই ইউ ব্লকে ঢোকার দীর্ঘদিনের প্রয়াসের বিষয়টি যিনি দেখছেন, সেই ই ইউ কমিশনার জোহানেস হান বলেছেন, দেখেশুনে মনে হচ্ছে, কাদের ধরা হবে, অভ্যুত্থানের আগে থেকেই তার তালিকা তৈরি করে রেখেছিল সরকার।

জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মের্কেলের মুখপাত্র স্টেফেন সেবার্ট রাস্তায় ধৃত সন্দেহভাজনদের ওপর প্রকাশ্যে বদলা নেওয়ার যে ছবি দেখা গিয়েছে, তার নিন্দা করেছেন। এরডোগানই গতকাল মৃত্যুদণ্ড ফের চালু করার ইঙ্গিত দিতেই সেবার্ট বলেন, তাহলে ইইউতে তুরস্কের ঢোকার ব্যাপারে আলোচনা বন্ধ হয়ে যাবে। মোঘেরিনিও বলেন, স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, মৃত্যুদণ্ড চালু করলে কোনও দেশই ই ইউ-র সদস্য হতে পারবে না।

এদিকে তুরস্ক এরডোগানের কট্টর বিরোধী মুসলিম ধর্মগুরু ফেতুল্লা গুলেনকে ফেরত পাঠাতে আমেরিকার কাছে দাবি তুললেও কেরি জানিয়ে দিয়েছেন, আগে প্রমাণ দিক আঙ্কারা, শুধু অভিযোগ করলেই হবে না।

প্রসঙ্গত, মানবাধিকার ও মিডিয়ার স্বাধীনতার ইস্যুতে এরডোগানের ভূমিকায় উদ্বেগের জেরেই তুরস্ক ই ইউতে ঢুকতে পারছে না। যদিও ই ইউ এ ব্যাপারে একটি ডিলের মাধ্যমে তুরস্কের নাগরিকদের বিনা ভিসায় ভ্রমণের সুযোগ দিয়েছে। ডিল অনুসারে, সাম্প্রতিক উদ্বাস্তু সংকট মোকাবিলায় গ্রিসে চলে যাওয়া লোকজনকে ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়েছে তুরস্ক।