ওয়াশিংটন ও তেহরান: ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করায় ইরানকে ‘হুঁশিয়ার’ করল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন জানিয়ে দিল, এমন কাণ্ড ফের ঘটলে তেহরানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। পশ্চিমি দুনিয়াকে ইরানের পাল্টা, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পূর্ণ অধিকার রয়েছে তাদের।
গতকালই একটি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর কথা স্বীকার করেছে ইরান। এরপরই তেহরানের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ দিতে শুরু করেছে আমেরিকা। প্রসঙ্গত, সংযুক্ত রাষ্ট্রপুঞ্জে ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব অনুযায়ী, ইরান এমন কোনও ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা বা উৎক্ষেপণ করতে পারবে না, যাতে পরমাণু অস্ত্র বহন করা যায়।
রাষ্ট্রপুঞ্জের এই প্রস্তাবকে হাতিয়ার করেই এদিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে জানানো হয়েছে, ইরানের এই পদক্ষেপ গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে। এদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন জানান, আপাতত ইরানকে নোটিশে রাখা হচ্ছে। ভবিষ্যতে একই কাজ হলে, কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
যদিও, পরীওক্ষার স্বপক্ষে জোর সওয়াল করে সাফাই দিতে গিয়ে ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হোসেন দেঘান জানান, যে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা হয়েছে, তা পরমাণু অস্ত্রবহনে সক্ষম নয়। ফলে, এতে রাষ্ট্রপুঞ্জের কোনও চুক্তিভঙ্গ করেনি তেহরান।
পাশাপাশি, পশ্চিমী দুনিয়ার রক্তচক্ষুকে পাল্টা একহাত নিয়েছেন হোসেন। বলেছেন, দেশের সুরক্ষার জন্য প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরি করতে থাকবে ইরান। তিনি মনে করিয়ে দেন, এক্ষেত্রে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না। কোনও দেশ ইরানের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারবে না বলেও জানান তিনি।
তিনি এ-ও জানিয়ে দেন, ইরানকে কেউ দুর্বল ভাবলে ভুল করা হবে। ইরানের হাতে ২ হাজার কিলোমিটার পাল্লার মিসাইল রয়েছে, যা ইজরায়েল (মার্কিন বন্ধু হিসেবে পরিচিত) সহ ওই অঞ্চলের মার্কিন ঘাঁটিগুলিকে টার্গেট করতে সক্ষম।
ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি ও পরীক্ষা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমি দুনিয়ার বহু দেশের সঙ্গে ইরানের দীর্ঘদিনের সমস্যা। ইরানের প্রেসিডেন্ট আহমেদিনেজাদের আমলে এক সময় সেদেশের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞাও জারি হয়। বহু চেষ্টা ও আলোচনার পর পরমাণু পরীক্ষারোধ চুক্তি স্বাক্ষর করার পর ইরানের ওপর সেই নিষেধাজ্ঞা গত বছর ওঠে।
কিন্তু, ফের ইরান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে। সম্প্রতি, ইরান সহ সাত মুসলিম-প্রধান রাষ্ট্রের বাসিন্দাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ট্রাম্প প্রশাসন। এরপরই ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র-পরীক্ষা। সবমিলিয়ে ইরান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নতুন সংঘাতের আশঙ্কা দানা বেঁধেছে।