ওয়াশিংটন: পাকিস্তানের অবশ্যই উচিত নিজের দেশের মাটিতে সন্ত্রাসবাদীদের কাজকর্ম করতে না দেওয়া ও শীর্ষ লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গি, তাদের মাথা হাফিজ সঈদের বিচার করা। পাকিস্তানকে কালো তালিকায় ফেলা হবে কিনা, সে ব্যাপারে ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ)-এর গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের প্রাক্কালে এই অভিমত জানালেন মার্কিন বিদেশ দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয় ব্যুরোর প্রধান অ্যালিস ওয়েলস। পাকিস্তানে গত বৃহস্পতিবার সন্ত্রাসবাদে অর্থের জোগান দেওয়ার অভিযোগে লস্কর বা জামাত-উদ-দাওয়ার ‘চার শীর্ষ নেতা’র গ্রেফতারিকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি। পাক আইন প্রনয়ণকারী এজেন্সিগুলির হাতে ধৃত ওই চারজনকে প্রফেসর জাফর ইকবাল, ইয়াহিয়া আজিজ, মহম্মদ আশরফ ও আবদুল সালাম বলে শনাক্ত করা হয়েছে।
ওয়েলস ট্যুইট করেছেন, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান যেমনটা বলেছেন, পাকিস্তানকে তার নিজের ভবিষ্যত্ ভেবেই নিজের ভূখণ্ডে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলির তত্পরতা বন্ধ করতে হবে। চার লস্কর নেতাকে পাকিস্তান গ্রেফতার করেছে, এ খবরে সন্তোষ জানাচ্ছি। লস্করের জঘন্য হামলার বলি, ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন দেখতে চান, এই লোকগুলির, লস্কর নেতা হাফিজ সঈদের পাশাপাশি বিচার হয়েছ
পাকিস্তানের নিজের মাটিতে সক্রিয় সন্ত্রাসবাদীদের ধরেও পরে ছেড়ে দেওয়ার একাধিক নজির রয়েছে। প্যারিস-কেন্দ্রিক সংস্থা এফএটিএফ পাকিস্তানের গ্রে লিস্ট বা ধুসর তালিকাভুক্তি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে। গত বছরের জুনে পাকিস্তানকে তারা ওই তালিকায় ফেলে, সেইসঙ্গে একটি অ্যাকশন প্ল্যান দিয়ে এ বছরের অক্টোবরের মধ্যেই তা সম্পূর্ণ করতেও বলে। পাকিস্তানকে এই প্রক্রিয়া পূরণ না হলে ইরান, উত্তর কোরিয়ার পাশে কালো তালিকায় ঢুকতে হবে বলেও হুঁশিয়ারিও দেয় তারা। পাকিস্তানের পারফরম্যান্স দেখেই ঠিক হবে তারা গ্রে লিস্টে থাকবে, না কালো তালিকায় পড়বে না কি ক্লিনচিট পাবে।
গত মাসেও ওয়েলস পাকিস্তানকে হাফিজ সঈদ, মাসুদ আজহারের মতো সন্ত্রাসবাদীর বিচার করতে বলেছিলেন। ‘সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রবেশে’ যুক্ত লোকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে ইসলামাবাদের আন্তরিকতার ওপর ভারত-পাক সম্পর্কে উত্তেজনা হ্রাস নির্ভর করছে বলে অভিমত জানিয়েছিলেন তিনি। প্রসঙ্গত, ভারত-পাক সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা মাথাচাড়া দিয়েছে গত ৫ আগস্ট নয়াদিল্লির জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার ও তার প্রতিক্রিয়ায় ইসলামাবাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের মাত্রা কমিয়ে পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের পদক্ষেপে।
হাফিজ সঈদকে বিশেষ তালিকাভুক্ত বিশ্ব সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করে ২০১২-য় তার ন্যয্য বিচার সম্ভব করে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য দিলে ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে আমেরিকা।