লন্ডন: ভারতে তাঁকে যাতে ফেরত পাঠানো না হয়, সেই পিটিশনের ব্যাপারে ব্রিটেনের আদালতের সিদ্ধান্ত ঘোষণার দিনকয়েক আগে ট্যুইট করে বিজয় মাল্য বিভিন্ন ভারতীয় ব্যাঙ্ক থেকে ধার নেওয়া ১০০ শতাংশ ‘জনগণের টাকা’ ফেরত দেওয়ার প্রস্তাব দিলেন।
গতকালই অগুস্তাওয়েস্টল্যান্ড ভিভিআইপি চপার ডিলে অভিযুক্ত মিডলম্যান ক্রিশ্চিয়ান মাইকেলকে দুবাই থেকে প্রত্যর্পণের মাধ্যমে ভারতে ফেরানো হয়েছে। মাল্য, নীরব মোদি, মেহুল চোকসির মতো আর্থিক অভিযোগে কাঠগড়ায় ওঠা লোকজনের বিরুদ্ধে একই উদ্যোগ নিয়েছে ভারত সরকার। সেই প্রেক্ষাপটেই প্রস্তাব মাল্যের।
ভারতের নানা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া প্রায় ৯০০০ কোটি টাকা ঋণ শোধ না করে দেশত্যাগ করেছেন তিনি। জালিয়াতি, বেআইনি অর্থ লেনদেনের অভিযোগে তাঁকে ভারতে ফেরানোর আইনি তোড়জোড় চলছে। ব্রিটেনে গ্রেফতার হওয়ার পর গত বছরের এপ্রিল থেকে জামিনে রয়েছেন তিনি। ১০ ডিসেম্বর লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে রায় বেরতে পারে এ ব্যাপারে। মাল্যের দাবি, তাঁর প্রত্যর্পণের ইস্যুটি ‘আলাদা’ ব্যাপার যাতে আইন তার নিজের মতো চলবে। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল জনসাধারণের টাকা। আমি ১০০ শতাংশ অর্থ ফেরত্ দিতে চাই। সরকার ও ব্যাঙ্কগুলিকে বিনীত ভাবে তা গ্রহণের অনুরোধ করছি। যদি প্রত্যাখ্যান হয়, কেন হবে?



কয়েকটি ভারতীয় মিডিয়ায় জল্পনা চলছে, প্রত্যর্পণ মামলায় কী রায় বেরচ্ছে, সেটা আগাম আঁচ করেই মাল্যের এহেন প্রস্তাব। যদিও সেই জল্পনা উড়িয়ে তাঁর ট্যুইট, একেবারে বোধহীন কথাবার্তা। ২০১৬ থেকে রফা-সমঝোতার প্রস্তাব দিয়ে আসছি।
বেশ কয়েক সপ্তাহ চুপ থাকার পর বুধবার সকাল থেকেই দফায় দফায় ট্যুইট করে তিনি সাফাই দিতে থাকেন যে, অধুনালুপ্ত কিংফিশার এয়ারলাইনকে বাঁচিয়ে রাখতেই বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেন তিনি। লেখেন, কিছুটা চড়া বিমান জ্বালানির দামের জন্য বিমান সংস্থা আর্থিক সমস্যায় ছিল। ব্যারেলপিছু ১৪০ মার্কিন ডলার, সবচেয়ে বেশি অশোধিত তেলের দামের ধাক্কায় লোকসান বেড়ে চলে। সামাল দিতেই খরচ হয় ব্যাঙ্কঋণের টাকা। আমি মূলধনের ১০০ শতাংশ ফেরত দিতে চাইছি। দয়া করে নিন।
নিজের মদ প্রস্তুতকারী সংস্থা ইউনাইটেড ব্রিউয়ারিসের উল্লেখ করে মাল্য বলেছেন, ভারতের সবচেয়ে বড় অ্যালকোহল নির্মাতা গোষ্ঠী বছরভর সরকারি কোষাগারে কয়েক হাজার কোটি টাকা দিয়েছে।
ভারত সরকার ও মিডিয়ারও সমালোচনা করে মাল্য ট্যুইটে লিখেছেন, রাজনীতিকরা, মিডিয়া বারবার চিত্কার করছে আমি নাকি ঋণ খেলাপি যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের টাকা নিয়ে পালিয়েছে। এসব মিথ্যা কথা। কেন আমি ন্যয়বিচার পাই না, কর্নাটক হাইকোর্টে দেওয়া একই রফা প্রস্তাব নিয়েও কেন এত শোরগোল। দুঃখজনক।