নয়াদিল্লি: অজান্তেই আপনার ঘরে সিঁধ কাটছে মোবাইল ফোনে থাকা অ্যানড্রয়েড অ্যাপ। চাঞ্চল্যকর তথ্য আমেরিকার ভার্জিনিয়া টেক বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং-এর কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের গবেষণায়। চাঞ্চল্যকর এই দাবিতে ঘুম উড়ে যাওয়ার জোগাড় মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের।
গবেষকরা বলছেন, অ্যানড্রয়েড অ্যাপগুলি গোপনে স্মার্টফোন থেকে সরিয়ে ফেলছে ব্যক্তিগত তথ্য! সম্প্রতি এনিয়ে এক গবেষণায় হাত দেয় আমেরিকার ভার্জিনিয়া টেক বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং-এর কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগ।
ওই বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড্যাফনে ইয়াও এবং অ্যাসিসট্যান্ট প্রফেসর গ্যাং ওয়াং-এর নেতৃত্বে গবেষণা চালান একদল বিজ্ঞানী। তাঁদের দাবি, মোবাইল ফোনে থাকা ছবি, ফোন নম্বর, ভোগলিক অবস্থান, ব্যাঙ্কের লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য ছাড়াও অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করছে অ্যাপগুলি। শুধু সিঁধ কেটে তথ্য চুরি করাই নয়, অ্যাপগুলি একে অপরের সঙ্গে কথা বলছে এবং চুরি করা তথ্য আদানপ্রদান করছে।


কিন্তু কীভাবে এই তথ্য পাচার সম্ভব?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যখন কোনও অ্যাপ ডাউনলোড করা হয়, তখনই ওই অ্যাপ গোটা মোবাইল ফোনের তথ্য ভাণ্ডার কব্জা করে নেয়। তারপর চলতে থাকে চুরি। বিশেষজ্ঞদের সন্দেহের তালিকার ওপরের দিকে গেমের ফ্রি অ্যাপ। তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্ত বলছেন, অ্যাপগুলি কোথাও লগ-ইন করছি, ব্যক্তিগত তথ্য দিচ্ছি। অন্য অ্যাপগুলিও তা পাচ্ছে। অনেক গেম আছে যারা যেটা চুরি করে অন্যকে দিচ্ছে। অ্যাপ ডাউনলোড করার সময়ই সব অ্যাকসেস করতে চায়।


কোথায় যাচ্ছে এইসব তথ্য?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গোপনে এইসব তথ্য দেওয়া হচ্ছে নানা বিশ্লেষক সংস্থাকে। তারা ব্যক্তি ভিত্তিক প্রোফাইল তৈরি করে বিক্রি করে দিচ্ছে বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থাকে। আরেক তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ কল্যাণ কর বলেন, যার কাছে যত বেশি তথ্য আছে সে ব্যবসায়িকভাবে তত সাফল্য পেতে পারে। আমাকে একটা কনজিউমার হিসাবে ভাবা হয়। একটা প্রোফাই তৈরি করে ভাবা হয় কাকে বিক্রি করা হবে। আইসক্রিম খেতে ভালবাসি কি না, বেড়াতে যেতে ভালবাসি কি না, ব্যাঙ্কে টাকা আছে কি না। সব জেনে, সেই তথ্য বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের কাছে।


মার্কিন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি, গবেষকরা নিজেদের তৈরি বিশেষ একটি সফটঅয়্যার ব্যবহার করেছেন গবেষণায়। প্রায় ৯ মাস ধরে ৯ হাজার ৯৪০ টি ম্যালঅয়্যার অ্যাপ এবং আরও কয়েক হাজার অ্যাপের গতি প্রকৃতি ও ধরণ বিশ্লেষণ করেই তাঁরা এই সিদ্ধান্তে এসেছেন।
স্বাভাবিকভাবেই মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই তথ্য চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিশ্বজুড়ে। পাশাপাশি, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, আরও বেশি সচেতন হতে হবে অ্যাপ ব্যবহারকারীদের। যে কোনও অ্যাপ ডাউনলোড করার আগে তার সম্পর্কে ভাল করে জানতে হবে। তবেই ঠেকানো যাবে সিঁধেল অ্যাপকে।