ইসলামাবাদ: ভারতের সঙ্গে কাশ্মীর নিয়ে চলতি সংঘাতের মধ্যেই পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানিয়ে দিল, তারা পরমাণু অস্ত্র ‘প্রথম ব্যবহার না করা’র নীতি মেনে চলে না। গত মাসে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ আগামী দিনে কখনও প্রথম পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগ না করার নীতি থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ভবিষ্যতে পরিস্থিতি কী হবে, তা দেখেই ঠিক হবে ভারত কী করবে। আজ পাক সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, আমাদের প্রথম ব্যবহার না করার কোনও নীতি নেই। আমাদের অস্ত্রশস্ত্র রাখা আছে প্রতিরোধের জন্য। আর ভারত কী করবে, কী পলিসি নেবে, সেটা তাদের ব্যাপার। জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়ে পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী দুটি দেশের চলতি সংঘাতের মধ্যেই পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সম্প্রতি জানান, তাঁর দেশ কখনই ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের সূচনা করবে না। কিন্তু আজ কিছুটা ভিন্ন সুরে গফুর বলেন, প্রথম আঘাত এলে পাল্টা আঘাতটা হবেই। আমরা সংঘাত এড়িয়ে চলেছি। পরমাণু শক্তিধর দেশগুলির যুদ্ধে জড়ানোর কোনও জায়গাই নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। একইসঙ্গে গফুর জানিয়ে দেন, কাশ্মীর তাঁদের শিরায় রয়েছে, তাকে রক্ষা করতে যতদূর যেতে হয়, যাবে পাকিস্তান। তিনি ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলেরও তীব্র নিন্দা করেন। পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস-এর ডিরেক্টর জেনারেল গফুর বলেন, সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদি একটি অনৈতিক কাজ করেছেন, ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করেছেন। এটা আর আদর্শের সংঘাত নয়। ভারত পাকিস্তানকে ‘পরোক্ষে আক্রমণ চালিয়ে গিয়েছে’ বলে অভিযোগ করে প্রাক্তন ভারতীয় নৌবাহিনীর অফিসার কুলভূষণ যাদবের দৃষ্টান্তও দেন তিনি। গফুর বলেন, পাকিস্তান গত ২০ বছর ধরে একটা মিশ্র যুদ্ধ লড়ছে এবং বর্তমান সংঘাতের প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের জবাব দেওয়ার রাস্তা খোলা রয়েছে অর্থনীতি, কূটনীতি, গোয়েন্দাগিরির মধ্যে। তিনি বলেন, হয়তো ভারত ভাবছে, আমাদের দুর্বল করতে পারে, এমন ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আমরা ভারতকে বলতে চাই, যু্দ্ধে শুধু অস্ত্রশস্ত্র, অর্থনীতি দিয়ে লড়াই হয় না, দেশপ্রেম দিয়েও হয়। প্রধানমন্ত্রী মোদির ‘ফ্যাসিস্ত’ সরকার ‘উপমহাদেশে নেহরুর পদক্ষেপগুলি উপড়ে ফেলেছে’ বলে অভিমত জানিয়ে তিনি দাবি করেন, ভারতে আরএসএস ও নাত্সি দর্শন ক্ষমতায় রয়েছে। মুসলিম, দলিত সহ সংখ্যালঘুদের অস্তিত্ব বিপন্ন করে তুলেছে তারা।