লন্ডন: ঐতিহাসিক গণভোটের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে চলে দেশে প্রচলিত গর্ভপাতের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞাকে প্রত্যাহার করল আয়ারল্যান্ড।


গর্ভপাতকে মান্যতা দেওয়ার জন্য আইন বদলের দাবিতে আন্দোলনের শুরুটা হয়েছিল ৬ বছর আগে। ২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডে কর্মরত ৩১ বছর বয়সী ভারতীয় বংশোদ্ভূত দন্ত-চিকিৎসক সবিতা হলপ্পানাভরের মৃত্যুর জেরে বিক্ষোভ-প্রতিবাদে উত্তাল হয়েছিল এই গোঁড়া ক্যাথলিক দেশ।


প্রসঙ্গত, ভ্রুণ নষ্ট হওয়ায় সবিতা গর্ভপাত করাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, আইরিশ আইনে গর্ভপাতে নিষেধাজ্ঞা থাকায় তা করতে দেওয়া হয়নি। এর ফলে, ভ্রুণ থেকে সবিতার শরীরে সেপসিস ছড়িয়ে পড়ে। মৃত্যু হয় তাঁর।


এই ঘটনায় আয়ারল্যান্ড জুড়ে নতুন বিতর্কর জন্ম দেয়। প্রসঙ্গত, ১৯৮৩ সালের অষ্টম সাংবিধানিক সংশোধনীতে বলা হয়েছিল, মা ও শিশুর সমান অধিকারের কথা। সেখানে  গর্ভপাতকে বেআইনি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু, আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, বিশেষ ক্ষেত্রে, যেখানে মায়ের জীবন বিপন্ন, সেক্ষেত্রে গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়া হোক।


শতাব্দী-প্রাচীন গোঁড়া আইন বদলের দাবি ওঠে চারদিকে। এই নিয়ে বিস্তর তর্ক-বিতর্ক হয়। অবশেষে শনিবার (স্থানীয় সময়) রাতে ঐতিহাসিক গণভোটের মাধ্যমে অষ্টম সংশোধনী প্রত্যাহার করায় সম্মতি মেলে। দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ আইন প্রত্যাহারের পক্ষে রায় দেন।


এই ঘটনাকে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেছেন আয়ারল্যান্ডের ভারতীয় বংশোদ্ভুত প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকর। তিনি এই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। এদিন গণভোটের পর তিনি বলেন, আজ আয়ারল্যান্ডের ঐতিহাসিক দিন।


গণভোটের রায়ের পর সবিতার বাবা আন্দনাপ্পা ইয়ালাগি জানান, এই রায়ে তিনি খুশি। বলেন, আয়ারল্যান্ডবাসীকে ধন্যবাদ জানানোর কোনও ভাষা নেই আমার। সবিতা বিচার পেল। এখন আর কারও অবস্থা তাঁর মতো হবে না।