ওয়াশিংটন: ভারত-চিন সীমান্ত সংঘাতের ইস্যুতে প্রথম মুখ খুলে বিডেন প্রশাসন নিশানা করল শি জিনপিং প্রশাসনকে।  সদ্য আমেরিকার শাসনভার হাতে নিয়েছেন জো বাইডেন। ২০ জানুয়ারি ৪৬তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নিয়েছেন ডেমোক্র্যাট বাইডেন।

বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের জনৈক শীর্ষকর্তা বেজিংয়ের প্রতিবেশীদের ধমক-চমক দেওয়ার চেষ্টার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, তাঁরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন। কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সকলের ভাগ করা একক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় শরিকদের পাশেই থাকবে আমেরিকা। হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র এমিলি জে হর্ন  বলেছেন, পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছি আমরা।  ভারত ও চিন সরকারের মধ্যে চলতি আলোচনার দিকেও খেয়াল আছে আমাদের।  সরাসরি আলোচনা ও সীমান্ত সংঘাতের শান্তিপূর্ণ মীমাংসায় সমর্থন করে যাব আমরা।

চিনের সাম্প্রতিক ভারতের ভূখণ্ডে ঢুকে জমি দখলের চেষ্টার ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। আরও বলেন, বেজিং তার পড়শীদের যে কায়দায় ধমকে-চমকে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে, আমেরিকা তাতে বিচলিত।  আমরা ভারত-প্রশান্তমহাসাগরীয় এলাকায় আমাদের সবার সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া সমৃদ্ধি, সুরক্ষা ও মূল্যবোধ রক্ষায় বন্ধু, শরিক ও সঙ্গীদের পাশে রয়েছি।

গত ৫ মে থেকে চিন, ভারতের মধ্যে লাদাখে সামরিক সংঘাত চলছে। দুদেশের মধ্য়ে সমঝোতায় পৌঁছনোর লক্ষ্যে বেশ কয়েক দফায় সামরিক, কূটনৈতিক আলোচনা হলেও এখনও পর্যন্ত কোনও অগ্রগতি হয়নি। চিনের ক্রমবর্ধমান সামরিক পেশী প্রদর্শনের জেরে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে উদ্ভূত পরিস্থিতি প্রথম সারির বিশ্ব শক্তিগুলির আলোচনার অন্যতম বিষয় হয়ে উঠেছে। আমেরিকা চিনের লাগাতার আধিপত্য রুখতে কাডকে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কাঠামো করার কথা বলছে।

চিন দক্ষিণ ও পূর্ব চিন সমুদ্রে এলাকাগত বিরোধে জড়িয়ে পড়েছে। গত কয়েক বছরে ওই এলাকায় মানবনির্মিত দ্বীপগুলির সামরিকীকরণেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে তারা। গোটা দক্ষিণ চিন সমুদ্রের মালিকানাই দাবি করে চিন। কিন্তু ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ব্রুনেই, তাইওয়ানের মতো দেশগুলি তা নস্যাত্ করে থাকে। পূর্ব চিন সমুদ্রে জাপানের সঙ্গেও এলাকাগত বিরোধ আছে চিনের। গোটা দক্ষিণ চিন ও পূর্ব চিন সমুদ্র খনিজ সম্পদ, তেল, আরও অন্য প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ। বিশ্ব বাণিজ্যেও তার গুরুত্ব অসীম। এই বিতর্কিত জলসীমার  ওপর আমেরিকা কোনও দাবি না করলেও দক্ষিণ চিন সমুদ্রে চিনের অধিকারের দাবি উড়িয়ে যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান নামিয়েছে।

চিনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতের প্রেক্ষিতেই সংসদের যুগ্ম অধিবেশনে গত সপ্তাহে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ জানিয়ে দিয়েছেন, ভারত দুদেশের মধ্যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবর সামরিক উপস্থিতি জোরদার করেছে নিজের সার্বভৌমত্ব রক্ষায়। তিনি বলেছেন, আমার সরকার দেশের স্বার্থরক্ষায় পুরোপুরি দায়বদ্ধ, সতর্কও। এলএসি-তে ভারতের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাড়তি বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।