টোকিও: ঠাকুর্দা দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। বাবা প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী। তা হলে কি রাজনীতির সাতসতেরো উত্তরাধিকার সূত্রেই পেয়েছিলেন শিনজো আবে (Shinzo Abe)? জাপানের (japan) অন্দরমহলে কান পাতলে হয়তো এমন শোনা যাবে। তবে উত্তরাধিকার সব কিছু তাঁকে থালায় সাজিয়ে দেয়নি ।


চড়াই-উতরাইয়ের রাজনৈতিক জীবন


  ২০০৬-২০০৭। তার পর ২০১২ থেকে ২০২০। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানের ইতিহাসে দীর্ঘতম (longest serving) সময় প্রধানমন্ত্রী (prime minister) পদে থাকার 'সুবাদে' কঠিন থেকে কঠিনতর চ্যালেঞ্জ সামলাতে হয়েছিল নোবুসুকে কিশির নাতিকে। একদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি, অন্য দিকে সে দেশের সংবিধানের ৯ নম্বর অনুচ্ছেদ সংশোধন ঘিরে তুমুল বিতর্ক। সঙ্গে একের পর পর এক রাজনৈতিক দোলাচল। সব মিলিয়ে টালমাটাল হয়েছিল শিনজোর কেরিয়ার। কিন্তু থামেননি তিনি। পিছিয়েও যাননি। বিশেষত জাপানের অর্থনীতি শক্তিশালী করতে তাঁর ভাবনাচিন্তা 'আবেনমিক্স' নামে জনপ্রিয়তা পায়। একই সঙ্গে জাপানের বৈদেশিক নীতি মসৃণ করতেও দূরন্ত ভূমিকা ছিল তাঁর। 


ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক 


 এক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে তাঁর রসায়ন বিশেষভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে গোটা বিশ্বের। ২০১৪ সালে ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথি হয়ে এসেছিলেন আবে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনিই প্রথম এই সম্মানের অধিকারী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও তাঁর সখ্যের কথা সুবিদিত। আজ তাঁর মৃত্য়ুর খবরে টুইটারে শোকপ্রকাশ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। শিনজো আবের উদ্দেশে গভীর শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় শোক পালন করার কথা আগামিকাল। সবটা থেকে ভারত-জাপান রসায়ন স্পষ্ট অনেকের কাছেই। 
  তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্বের সবটাই যে মসৃণ ছিল এমন নয়। অনেকের চোখে দক্ষিণপন্থী জাতীয়তাবাদী নেতার তকমা পেয়েছেন আবে। কিন্তু একই সঙ্গে সম্ভ্রমও কুড়িয়েছেন। বিশেষত জাপানের সংবিধানের ৯ নম্বর অনুচ্ছেদ সংশোধন করে রীতিমতো তোলপাড় ফেলেন শিনজো আবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তৈরি সংবিধানের ওই অনুচ্ছেদে আমেরিকার জোরাজুরিতে এমন ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল যাতে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী বা বায়ুসেনা কোনওটাই রাখতে না পারে জাপান। 


গুলিতে হঠাৎ শেষ...


  ছবিটা বদলে দিয়েছিলেন আদতে ইয়ামাগুচি প্রিফেকচারের বাসিন্দা শিনজো। ১৯৫৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর প্রভাবশালী এক রাজনৈতিক পরিবারের জন্ম তাঁর। স্নাতক স্তর পর্যন্ত সেইকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া। তার পর আমেরিকায় চলে যান। ফিরে একাধিক সরকারি পদে কাজ। ধীরে ধীরে রাজনৈতিক জীবনে জড়িয়ে পড়া।
 কয়েকটা গুলিতে সব শেষ আজ। 


আরও পড়ুন:শিনজো আবেকে শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় শোক ভারতে, ঘোষণা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর