নয়াদিল্লি: কাশ্মীর নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্কিত মন্তব্য প্রত্যাহারে নারাজ মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মহাথির মহম্মদ। গত ৫ আগস্ট নরেন্দ্র মোদি সরকারের সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের নিন্দায় গত মাসে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে ভারত ‘আগ্রাসন চালিয়ে কাশ্মীর দখল করেছে’ বলে অভিযোগ তুলে বিতর্কে জড়ান তিনি। ভারত এর তীব্র নিন্দা করে।গত সোমবার ভারতের শীর্ষ নিরামিষ ভোজ্য তেল ব্যবসায়ীদের সংগঠনও তার সদস্যদের মালয়েশিয়ার পাম তেল বয়কটের ডাক দেয়। দুদেশের সম্পর্কে এটা নজিরবিহীন ব্যাপার।
ভারত নানা মহলে কাশ্মীর সংক্রান্ত পদক্ষেপের নিন্দা সত্ত্বেও পরিষ্কার জানিয়েছে, এটা তার ঘরোয়া ব্যাপার।
মহাথির দেশের পার্লামেন্টের বাইরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আমরা স্পষ্ট কথা বলি, যা বলি, তা বদলাই না বা ফিরিয়ে নিই না। মুখে বলছি, রাষ্ট্রপুঞ্জে গৃহীত প্রস্তাব আমাদের সবার মানা উচিত। নয়তো রাষ্ট্রপুঞ্জের কী প্রয়োজন? কাশ্মীর প্রশ্নে ভারত ও পাকিস্তানের বিরোধের ব্যাপারে ১৯৪৮ ও ১৯৫০-এর দশকে একাধিক প্রস্তাব গৃহীত হয় রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে, যেগুলির একটি হল, কাশ্মীরের ভাগ্য নির্ধারণে গণভোট হওয়া উচিত। সে প্রসঙ্গই তোলেন তিনি।
মুম্বইয়ের নিরামিষ ভোজ্য তেল কারবারীদের সংস্থা সলভেন্ট এক্সট্র্যাক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার ডাকা মালয়েশিয়ার পাম তেল বয়কটের ডাকে কী প্রতিক্রিয়া হয়, তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার কথা ভাববেন বলে জানান মহাথির। বলেন, এটা তো ভারত সরকার নয়, অতএব কীভাবে ওদের সঙ্গে কথা বলে বোঝানো যায় দেখতে হবে, কেননা ব্যবসা-বাণিজ্য দুতরফা ব্যাপার, বাণিজ্য নিয়ে সংঘাত-যুদ্ধ হওয়া ভাল নয়।মালয়েশিয়ার সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘাত নিয়ে নয়াদিল্লি কোনও মন্তব্য করেনি এখনও পর্যন্ত।
ভারত সরকারের পরিসংখ্যান, ৩১ মার্চ শেষ হওয়া আর্থিক বছরে ভারতে মালয়েশিয়ার রপ্তানি হয়েছিল ১০.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের, আমদানির পরিমাণ ছিল ৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থমূল্যের। ভারত ২০১৮-য় ছিল মালয়েশিয়ার তৃতীয় সর্বোচ্চ পাম তেল ও সংশ্লিষ্ট পণ্য রপ্তানি ক্ষেত্র, যার আর্থিক পরিমাণ ১.৬৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বাণিজ্য ঘিরে উত্তেজনা প্রশমনে গত সপ্তাহে মালয়েশিয়া ভারত থেকে অশোধিত চিনি ও মহিষের মাংস আমদানি বাড়ানোর কথা ভাবছে বলে জানায়। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভোজ্য তেল আমদানিকারক দেশ ভারত ইন্দোনেশিয়া থেকেও পাম তেল, আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল থেকে সয়া তেলও কেনে।