মেক্সিকো সিটি: ঘুম ভাঙে ভোর সাড়ে পাঁচটায়। তারপর প্রাতরাশ- দুটো ডিম, একটা কলা আর আপেল স্মুদি। গোটা সকালটা রোদে পিঠ দিয়ে বসে পাশের বাড়ির মুরগিদের যত্নআত্তি করেন তিনি। আর পাঁচটা বুড়োর সঙ্গে চেহারায় কোনও তফাত নেই। কেউ না বলে দিলে বুঝতেই পারবেন না, ম্যানুয়েল গার্সিয়া হার্নান্দেজের বয়স ১২১!

তিনটে শতক দেখা গার্সিয়ার জন্ম ২৪ ডিসেম্বর, ১৮৯৬। জন্ম তারিখের প্রমাণস্বরূপ তাঁর বার্থ সার্টিফিকেট রয়েছে, রয়েছে মেক্সিকো সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্র। কিন্তু গিনেস বুকে নাম তোলার জন্য গার্সিয়ার কখনও কোনও মাথাব্যথা দেখা যায়নি। তাই তাঁর বয়সের বিষয়টিও বিশ্ববাসীর অজানা থেকে গিয়েছে।

গিনেস বলছে, এই মুহূর্তে বিশ্বের বয়স্কতম মানুষ জাপানের মাসাজো নোনাকা, জন্ম ২৫ জুলাই, ১৯০৫। কিন্তু গার্সিয়ার কাগজপত্র বলছে, নোনাকা তাঁর কাছে ছেলেমানুষ, তিনি তাঁর থেকে পাক্কা ৮ বছরের বড়! শুধু তাই নয়, তিনিই হবেন সর্বকালের বয়স্কতম মানুষ, হারিয়ে দেবেন ১১৬ বছর বয়সে মারা যাওয়া জাপানের জিরোয়েমন কিমুরাকে। সবথেকে বয়স্কা মহিলা অবশ্য ফ্রান্সের, ১২২ বছর ১৬৪ দিনে মারা যাওয়া জাঁ লুই ক্যালমোঁকে।

গার্সিয়া থাকেন তাঁর ৫৪ বছরের মেয়ে তোমাসার সঙ্গে, সিউদাদ জুয়ারেজে, উত্তর মেক্সিকোয়। পাশের বাড়ি থাকেন এক মার্কিনী, তাঁর মুরগি ফার্ম দেখাশোনা করেন তিনি। ১২১ বছরের জীবনে দুটোই দুঃখ। অল্প বয়সে বাবাকে হারানো আর এখন আগের মত কাজ করতে না পারা। তবু তিনি বেজায় খুশিতে বাঁচেন, বলেন, বয়স যে ৮০ টপকেছে, মনেই হয় না!

৪৫ বছর বয়সে বিয়ে করেন গার্সিয়া। স্ত্রীর বয়স ছিল ১৩। তাঁদের ৫ সন্তান, ১৫ নাতিনাতনি, নাতিনাতনির ৬ ছেলেমেয়ে। প্রায় ৭০ বছরের বিবাহিত জীবন কাটিয়ে ৮ বছর আগে মারা গিয়েছেন স্ত্রী রোসা। আগের মত আর ক্ষেতে কাজ করতে পারেন না গার্সিয়া, হাঁটতে গিয়েও আজকাল টলে যান একটু আধটু। কিন্তু এখনও তিনি রীতিমত জোরে হাঁটেন, ছানি কাটার পর দৃষ্টিও পরিষ্কার। মনও যুবকের মতই স্বচ্ছ।

১২৫ বছর বাঁচতে চান গার্সিয়া। বলেছেন, ভাল ঘুম, স্বাস্থ্যসম্মত খাওয়াদাওয়া, ভিটামিন ট্যাবলেট নেওয়া ও নিয়মিত কাজকর্মই তাঁর দীর্ঘ জীবনের উৎস।