বেজিং: কয়েক দিন আগেই অস্থিরতার খবর শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু সব গুঞ্জন নস্যাৎ করে নিজেকে অজেয় প্রমাণ করলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং। রবিবার তৃতীয় বারের জন্য কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান নির্বাচিত হলেন তিনি। কার্যত সর্বসম্মতিতে তাঁর নামেই সিলমোহর দিল কমিউনিস্ট পার্টি। মাও জে দংয়ের পর চিনপিংই চিনের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী নেতা বলে মত কূটনীতিকদের।


চিনে ফের কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান হলেন শি চিনপিং


রবিবার চিনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি চিনপিংয়ে আরও পাঁচ বছরের জন্য দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে। ফলে এ যাবৎ অভিজাত শ্রেণির মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগির যে টুকু অস্তিত্ব ছিল, তা মুছে গিয়ে এক ব্যক্তির শাসন কায়েম হল বলেই মনে করা হচ্ছে।


এ দিন, তৃতীয় বারের জন্য নির্বাচিত হয়ে চিনপিং বলেন, “চিনকে প্রয়োজন গোটা বিশ্বের। চিন যেমন একা এগোতে পারবে না, তেমনই বাকিদেরও চিনকে দরকার। দীর্ঘ ৪০ বছরের নিরলস প্রচেষ্টায় যে দুই ক্ষেত্রে অসাধ্যসাধন করে দেখিয়েছি আমরা, অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়ন এবং দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা।”


চিনপিং জানিয়েছেন, দেশের মানুষ এবং দলের বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে মন-প্রাণ দিয়ে পরিশ্রম করবেন তিনি। এ দিন চিনের সামরিক বাহিনীর কমিশনেরও প্রধান নিযুক্ত হয়েছেন ৬৯ বছর বয়সি চিনপিং। ফলে তৃতীয় বারের জন্য তাঁর প্রেসিডেন্ট হওয়া শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। আগামী বছর মার্চ মাসে  তাঁর নামে সরকারি সিলমোহর পড়বে।


আরও পড়ুন: Indian Army Diwali Celebration: ১০০০০ ফুট উচ্চতায় দীপাবলি পালন ভারতীয় জওয়ানদের, দেশবাসীকেও শুভেচ্ছা


চিনপিংয়ের নামে সিলমোহর দিতে গত এক সপ্তাহ ধরে আলাপ-আলোচনা চলছিল দলে। প্রায় ২ হাজার ৩০০ জন প্রতিনিধি তাঁর পক্ষেই মত দেন। ফলে প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ মাথা তোলারই সুযোগ পাননি। দলের ২০তম কংগ্রেসে নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গড়ে তোলা হয় প্রথমে। তার পর রবিবার চিনপিংয়ের পক্ষে ভোট দিতে সম্মিলিত হন সকলে।


সাত সদস্যের ওই কমিটিতেও চিনপিং ঘনিষ্ঠদেরই আধিক্য। এর মধ্যে রয়েছেন, লি কিয়াং। তিনি চিনপিংয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধ এবং সহযোগী। দলে এই মুহূর্তে তিনিই দু’নম্বর হয়ে উঠলেন। খাতায় কলমে তাতে সিলমোহর পড়তে পারে মার্চেই।


প্রায় একদশক আগে চিনের রাষ্ট্রনেতা হয়ে ওঠেন চিনপিং। মাও জে দংয়ের পর সে দেশে তাঁর মতো ক্ষমতা কুক্ষিগত হয়নি এ যাবৎ কারও হাতেই। এতদিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে সর্বোচ্চ যে দু’বছরের মেয়াদ নির্ধারিত ছিল, ২০১৮ সালে, তাও পাল্টে দেন চিনপিং। অনির্দিষ্ট কালের জন্য নিজে ক্ষমতায় থাকতেই তিনি এমন পদক্ষেপ করেন বলে মত সমালোচকদের।


নির্বাচিত হয়েই গোটা বিশ্বকে বার্তা চিনপিংয়ের


তবে চিনপিংয়ের হাতে বিশ্ব মানচিত্রে চিন লাগাতার এগিয়েই এসেছে। এই মুহূর্তে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চিন। সেনার মাধ্যমে সম্প্রসারণের উপর জোর দিচ্ছে তারা। শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক মহলে লাগাতার আমেরিকার বিরোধিতা করে, এশিয়া এবং ইউরোপীয় দেশগুলির কাছে নিজের অবস্থানও মজবুত করেছে চিন।