ভিয়েনা: প্রয়াত অস্ট্রিয়ার ধনকুবের ডিত্রাইশ মাতেশিৎজ (Dietrich Mateschitz)। এনার্জি ড্রিঙ্ক সংস্থা ‘রেড বুল’ –এর (Red Bull) সহ-প্রতিষ্ঠাতা তিনি। ‘রেড বুল ফর্মুলা ওয়ান রেসিং’ টিমেরও মালিক ডিত্রাইশ। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। শনিবার আমেরিকায় সংস্থার আধিকারিকরা তাঁর মৃত্যুর কথা জানান।


প্রয়াত 'রেড বুল' কর্ণধার ডিত্রাইশ মাতেশিৎজ


ডিত্রাইশের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যায়নি এখনও পর্যন্ত। তবে মোটর স্পোর্টস নিয়ন্ত্রক সংস্থা FIA-র প্রেসিডেন্ট মহম্মদ বেন সুলায়েম জানিয়েছেন, মোটর স্পোর্টের দুনিয়ায় অভিভাবকের ভূমিকা ছিল ডিত্রাইশের। তাঁর মৃত্যুতে শূন্যতা তৈরি হল বলে মন্তব্য করেন মহম্মদ।


‘রেড বুল’ –এর মুখ হিসেবেই জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছন ডিত্রাইশ। শুধুমাত্র গত বছরই বিশ্বের ১৭২টি দেশে ১০০০ কোটি ক্যান বিক্রি হয় ‘রেড বুল’ পানীয়ের।


তবে শুধু পানীয় বিক্রির মধ্যেই নিজের সাম্রাজ্য সীমিত রাখেননি ডিত্রাইশ।  মোটর স্পোর্ট, সংবাদমাধ্যম, রিয়েল এস্টেট, গ্যাস্ট্রোনমি ব্যবসারও অধিপতিও হয়ে ওঠেন তিনি। ফুটবল ক্লাব, হকি, রেসিং টিম পরিচালনা করে তাঁর সংস্থা। বিশ্বের কয়েকশো ক্রীড়াতারকার সঙ্গে চুক্তি রয়েছে তাঁদের।


আরও পড়ুন: IND vs PAK LIVE Score: সুপার সানডে, সুপার ডুয়েল, ২২ গজে আজ ফের ভারত-পাক দ্বৈরথ


১৯৮৪ সালে ডিত্রাইশ এবং তাইল্যান্ডের ব্যবসায়ী শালেও ইউভিদ্যা ‘রেড বুল’ –এর পত্তন করেন। সেই সময় এনার্জি ড্রিঙ্ক হিসেবে বাজারে ছেয়ে ছিল ‘ক্রেটিং দেং’ নামের একটি পানীয়, যা ছিল শালেও-রই তৈরি। একটানা ল্যাবে পড়ে থেকে সেই পানীয়তে তিন বছর ধরে আরও সংশোধন ঘটান ডিত্রাইশ। তার পর ‘রেড বুল’ নামে নতুন ভাবে আত্মপ্রকাশ করে।  


ডিত্রাইশের হাতে রকেটের গতিতে শেয়ার দর বাড়তে থাকে 'রেড বুল'-এর। প্রথমে ইউরোপের বাজার দখল করে তারা। তার পর পা রাখে আমেরিকায়। মোটর স্পোর্ট খেকে ফুটবল, এমনকি সঙ্গীতের দুনিয়াতেও একের পর এক লাভজনক চুক্তি স্বাক্ষর করতে সফল হয় সংস্থা। 


তিলে তিলে সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন ডিত্রাইশ মাতেশিৎজ


'রেড বুল' রেসিং টিমও ফর্মুলা ওয়ানের দুনিয়ায় বেনজির সাফল্য পেতে সক্ষম হয়। ২০১০, ২০১১, ২০১২ এবং ২০১৩ সালে পর পর কনস্ট্রাক্টর্স চ্যাম্পিয়নশিপে জয়ী হয় তারা। জার্মানির সেবাস্টিয়ান ভেত্তেল পর পর চার বার ড্রাইভার্স চ্যাম্পিয়নশিপে বিজয়ী হন। 


২০০৪ সালে ফোর্ডের কাছ থেকে জাগুয়ার রেসিং টিম কিনে নেন ডিত্রাইশ। ২০০৫ সালে 'রেড বুল'-এর অধীনে নতুন করে ওই টিম আত্মপ্রকাশ করে। এর পর মিনার্দিও কিনে নেন। নয়া নাম রাখেন 'তোরো রোসো'। 


শুধু ব্যবসায়িক সাফল্য়ই নয়, রাজনৈতিক মতাদর্শের জন্যও পরিচিত ছিলেন ডিত্রাইশ। ২০১৫-২০১৬ সালে সালে শরণার্থী সঙ্কট নিয়ে জার্মানির অ্যাঞ্জেলা মের্কেলের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। 'রেড বুল মিডিয়া হাউস' দক্ষিণপন্থী অবস্থানের জন্য় পরিচিত।