শিকাগো:  আট বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে থাকার পর আজ শেষলগ্নে এসে বিদায়ী ভাষণে আবেগে ভাসলেন বারাক ওবামা। হোয়াইট হাউস থেকে নয়, ঐতিহ্য ভেঙে বেরিয়ে এসে, ২০০৮ এবং ২০১২-র নির্বাচন জেতার পর যেখান থেকে বিজয় ভাষণ দিয়েছিলেন ওবামা, শিকাগোর সেই মূল কনভেনশন সেন্টার থেকে আজকের বিদায়ী ভাষণ দিলেন তিনি।


সেখান থেকে সারা দুনিয়ার উদ্দেশ্যে বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্টের বার্তা গণতন্ত্রের ওপর বিশ্বাস রাখুন। নিজে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে গণতন্ত্রকে সফল করুন। যাঁরা এর বিরোধিতা করবেন, তাঁদের নিজে উদ্যোগ নিয়ে দেখান, শেখান, গণতন্ত্রকে বোঝান। কখনও জিতবেন, কখনও এরমধ্যে থেকে হারবেন, কিন্তু শিখবেন অনেক, মন্তব্য ওবামার।

মার্কিন মুলুকের সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের হয়েও সওয়াল করেছেন তিনি, যাঁরা অনেক সময়ই অর্থনৈতিক পরিবর্তনের জেরে না না প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়েছেন। তাঁদের কথা ভেবে ওবামার বার্তা, একজন মানুষকে তখনই বোঝা যায়, যখন তাঁর জীবনটা তাঁর চোখ দিয়ে দেখা যায়।

প্রসঙ্গত, ওবামা ছিলেন প্রথম কালো চামড়ার মার্কিন প্রেসিডেন্ট, এবং তাঁর নির্বাচন পরবর্তী আমেরিকায় জাতপাতের ভেদাভেদ অনেক কমেছে বলে দাবি বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্টের। তিনি জানিয়েছেন, গত কুড়ি-তিরিশ বছর আগে যা পরিস্থিতি ছিল, তার তুলনায় এখন অনেক পরিবর্তন হয়েছে। নবীন মার্কিন নাগরিকরা চামড়ার রঙকে এখন সেভাবে গুরুত্ব দেন না।

তাঁর শাসনকালে আমেরিকার কী কী উন্নতি হয়েছে, সেসব কিছু নিজের বিদায়ী ভাষণে উল্লেখ করেন ওবামা। মাত্র একবারের জন্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাঁর আশা নির্বিঘ্নে, শান্তিতে ক্ষমতাবদল হয়ে যাবে।

তবে তাঁর ভাষণে সবচেয়ে হৃদয়স্পর্শী অংশ, যেখানে তিনি তাঁর স্ত্রী মিশেলকে গত পঁচিশ বছর ধরে তাঁর পাশে থাকার জন্যে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। স্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ওবামার মন্তব্য, 'তুমি আমাকে মানুষ হিসেবে আরও অনেক উন্নত করেছ'। তিনি বলেন, মিশেল শুধু তাঁর স্ত্রী নন, তাঁর সন্তানদের মা নন, তাঁর সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু। তাঁর জন্যে তিনি গর্বিত, পুরো দেশ গর্বিত। ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে তাঁকে পথিকৃৎ বলে সম্মোধন করেন ওবামা। মালিয়া এবং সাসার বাবা হতে পেরেও তিনি গর্বিত।

সবশেষে প্রত্যেক মার্কিনবাসীর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে তিনি বলেন, তাঁদের পথপ্রদর্শক হতে পেরে তিনি সম্মানিত। তবে তিনি থেমে থাকবেন না, আগামী দিনে এক সাধারণ মার্কিন নাগরিক হয়ে জীবনের লড়াইয়ে পাশে থাকবেন। তারপর ২০০৮-এর নির্বাচনী স্লোগান ফের মনে করিয়ে দিয়ে বলেন ‘ইয়েস উই ক্যান, ইয়েস উই ডিড, ইয়েস উই ক্যান’।