নয়া দিল্লি: হরিদ্বারের গঙ্গায় ভাসিয়ে দেবেন দেশের হয়ে জেতা পদক। এরপর ইন্ডিয়া গেটে আমরণ অনশনে বসবেন ভিনেশ ফোগত, বজরং পুনিয়া, সাক্ষী মালিকের মতো আন্তর্জাতিক পদকজয়ী কুস্তিগীররা।
তাঁদের দাবি, যৌন হেনস্থার অভিযোগ ওঠার পরেও বিজেপি সাংসদ ও ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই প্রতিবাদ জানাতেই দেশের হয়ে জেতা পদক গঙ্গায় বিসর্জন দিতে চান কুস্তিগীররা।
ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি এবং বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে ভারতের শীর্ষ কুস্তিগীররা বলেছেন যে তারা মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় হরিদ্বারের গঙ্গা নদীতে তাঁদের পদক ভাসিয়ে দেবেন তারপরে নতুন ইন্ডিয়া গেটে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশনে বসবেন।
এ প্রসঙ্গে অলিম্পিকে পদকজয়ী সাক্ষী মালিক বলেন, 'মেডেল আমাদের প্রাণ, তাই মেডেল ভাসিয়ে দিলে আর বেঁচে থাকার কোনও অর্থ হয় না। এবার আমরা ইন্ডিয়া গেটের সামনে আমরণ অনশনে বসব। আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম মেডেল ফেরত দেব। কিন্তু কাকে মেডেল ফেরত দেব, রাষ্ট্রপতিকে? যিনি একজন মহিলা হওয়া সত্ত্বেও মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে বসে সব দেখেছেন কিন্তু কিছুই বলেননি? প্রধানমন্ত্রীকে বলব? যিনি আমাদের ঘরের মেয়ে বলেন। কিন্তু ঘরের মেয়েদের কোনও খোঁজ না নিয়ে যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁকেই সংসদভবন উদ্বোধনের আমন্ত্রণ জানালেন ?' ট্যুইট করে ক্ষোভ প্রকাশ আন্দোলনকারী বজরং পুনিয়ার ।
বজরং পুনিয়ার (Bajrang Punia) দাবি অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের মধ্যে অলিম্পিক্স ব্রোঞ্জ পদকজয়ী ভারতীয় কুস্তিগীর সাক্ষী মালিকও রয়েছেন। ক্ষুব্ধ পুনিয়া আন্দোলনের মাঝেই পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলেন, 'আমাদের গুলি করে দাও।' জানা গিয়েছে, সাক্ষী ছাড়াও বজরং পুনিয়া, বিনেশ ফোগত ও সঙ্গীতা ফোগতের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে পারে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৭ (দাঙ্গা), ১৪৮ (সশস্ত্র দাঙ্গা), ১৪৯ (অবৈধ জমায়েত), ৩৫২ (অশান্তিতে ইন্ধন ও হেনস্থা), ৩৫৩ (সরকারি আধিকারিককে হেনস্থা) ও ১৮৬ (সরকারি আধিকারিককে কাজে বাধা) ধারা প্রয়োগ করতে পারে পুলিশ। বিনেশ, সাক্ষী, বজরংকে আটক করা হলেও পরে তাঁদের ছেড়ে দেয় দিল্লি পুলিশ। তবে যন্তর মন্তরে যেখানে তাঁবু খাটিয়ে কুস্তিগীররা প্রতিবাদ ও ধর্নায় বসেছিলেন, সেসব সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনের দিনেই কুস্তিগীরদের আন্দোলন ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল দিল্লির যন্তর মন্তর চত্বর। ভিনেশ ফোগত, বজরং পুনিয়া, সাক্ষী মালিক-সহ ৩ কুস্তিগীর এবং ১০৯ জন আন্দোলনকারীদের আটক করে দিল্লি পুলিশ। পরে মহিলাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক পদকজয়ী কুস্তিগীরদের বিরুদ্ধে হিংসা ছড়ানো, পুলিশকে নিগ্রহ, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। খালি করে দেওয়া হয়েছে যন্তর মন্তর চত্বর। আন্দোলনকারী কুস্তিগীরদের সেখানে আর ধর্নায় বসতে দেওয়া হবে না বলেও পুলিশ জানিয়েছে। আন্দোলন চলবে বলে পাল্টা জানিয়েছেন কুস্তিগীররা। যন্তর মন্তরের এই ঘটনায় কুস্তিগীরদের সমর্থন জানিয়ে নিন্দায় সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অরবিন্দ কেজরিওয়াল, এম কে স্ট্যালিন, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী-সহ বাম নেতারা।
আরও পড়ুন, ওজন কমাতে কীভাবে সাহায্য করে থালার মাপ ! অবাক করবে পুষ্টিবিদের এই ভিডিও