নিউ ইয়র্ক: আরও একবার নির্বাচনে লড়বেন বলে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু আইনি জটিলতায় আরও বেশি করে জড়িয়ে পড়লেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। এ বার সরাসরি তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনলেন এক লেখিকা (E Jean Carroll)। এক বছর বা দু’বছর নয়, ৩০ বছর আগে ট্রাম্প তাঁকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওই লেখিকার।


Emmy পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন ক্যারল


লেখার জগতে নিজস্ব পরিচিতি রয়েছে ই জিন ক্যারলের। Emmy পুরস্কারের জন্যও মনোনীত হয়েছিলেন। নিউ ইয়র্কের একটি আদালতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি। কিন্তু গোটা ঘটনা অস্বীকার করেন ট্রাম্প। তাঁকে মিথ্য়াবাদী বলে উল্লেখ করেন। তাতে নষ্ট হয় তাঁর ভাবমূর্তিও।


১৯৯৬ সালে নিউ ইয়র্কের একটি হোটেলে ট্রাম্প তাঁকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ক্যারলের। হোটেলের চেঞ্জিং রুমে তিনি ট্রাম্পের লালসার শিকার হন বলে দাবি করেছেন। নিজের লেখা বইয়েও সেই ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন ক্যারল। তাতে ট্রাম্প গোটা ঘটনা অস্বীকার করেন এবং তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করেন বলে দাবি করেছেন। ট্রাম্পের আচরণে তাঁর কেরিয়ার নষ্ট হয়েছে বলেও দাবি ক্যারলের।


আরও পড়ুন: Science: ইন্টারনাল ব্লিডিং বন্ধ করতে কৃত্রিম সিস্টেম MIT-র গবেষকদের


আদালতে তিন দশক আগের সেই ঘটনা বিশদে বর্ণনা করেন ক্যারল। জানান, একটি স্টোর থেকে বেরনোর সময় হঠাৎই ট্রাম্পের মুখোমুখি হন। কোনও মহিলার জন্য ব্য়াগ এবং টুপি কিনতে এসেছিলেন ট্রাম্প। কী কেনা উচিত, তারও সুপারিশ করেন তিনি। তার পর দু’জনের কথা চলতে থাকে। ক্যারলের দাবি, এর পর তাঁকে একটি লঁজরে পরে দেখার জন্য জোরাজুরি করেন ট্রাম্প। রাজি না হলে, ট্রাম্প নিজেও লঁজরে পরে দেখতে তৈরি হয়ে যান। এর পর একসঙ্গেই চেঞ্জিং রুমের দিকে এগোন তাঁরা। গোটা সময় হালকা হাসি-মস্করা করছিলেন ট্রাম্প। হালকা ফ্লার্টও করছিলেন।


কিন্তু চেঞ্জিং রুমে ঢুকতেই ট্রাম্পের আচরণ পাল্টে যায়, তিনি আগ্রাসী হয়ে ওঠেন বলে দাবি ক্যারলের। তিনি জানিয়েছেন, দেওয়ালে তাঁকে চেপে ধরেন ট্রাম্প। সজোরে মাথা ঠুকে যায় তাঁর। বাধা দিতে গেলে জোরে ধাক্কা দেন এবং ধর্ষণ করেন। কোনও রকমে হাঁটু তুলে ট্রাম্পকে আঘাত করেন এবং চে়ঞ্জিং রুম থেকে পালিয়ে যান বলে দাবি ক্যারলের। ৭৯ বছর বয়সি ক্যারল জানিয়েছেন, সেই অভিজ্ঞতা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, জীবনে কখনও কাউকে ভালবাসতে পারেননি তিনি। আজও ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা হওয়ার ওই মুহূর্ত, চেঞ্জিং রুমে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনুতাপ করেন। নিজের জীবন ফিরে পেতে চান বলে আদালতে জানিয়েছেন ক্যারল। ক্ষতিপূরণও দাবি করেছেন তিনি।


মিথ্যা অভিযোগ করছেন ক্যারল, দাবি ট্রাম্পের


বুধবার আদালতে ক্যারল নিজের বক্তব্য তুলে ধরার আগেই তাঁকে সোশ্য়াল মিডিয়ায় আক্রমণ করতে শুরু করেন ট্রাম্প। তাঁকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হচ্ছে দাবি করেন। তাতে ট্রাম্পের প্রতি রুষ্ট হয় আদালতও। বিচারপতি লুইস ক্যাপলান সেই নিয়ে সতর্ক করেন ট্রাম্পকে। তিনি সীমা লঙ্ঘন করেছেন, জ্যুরিদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করতে চাইছেন বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি।