ঋত্বিক প্রধান, কাঁথি: ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবে ভেসে গিয়েছে বই-খাতা। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির শৌলাতে খোলা আকাশের নীচে শুরু হল অস্থায়ী স্কুল। প্রতিদিন ত্রাণ শিবিরে থাকা ১০০ পড়ুয়াকে নিয়ে ২ ঘণ্টা ধরে চলছে ক্লাস। বই খাতা-সহ পড়াশোনার প্রয়োজনীয় সামগ্রীর পাশাপাশি দেওয়া হচ্ছে মাস্ক ও স্যানিটাইজারও।



মন্দির প্রাঙ্গণে ত্রিপলে বসে পড়ুয়ারা। খোলা আকাশের নীচে চলছে ক্লাস। এই ছবি শান্তিনিকেতনের নয়। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস বিধ্বস্ত পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির শৌলাতে শুরু হয়েছে অস্থায়ী স্কুল। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পর ১০ দিন কেটে গেলেও উপকূলবর্তী এলাকার সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তার ক্ষতচিহ্ন। প্রবল জলোচ্ছ্বাসের জেরে বাড়ি-ঘর ভেসে যাওয়ায় এখনও ত্রাণ শিবির বা নদী বাঁধের উপর থাকতে হচ্ছে বহু দুর্গত মানুষকে।



দুর্যোগের জেরে স্কুল পড়ুয়াদের অবস্থা আরও করুণ। অধিকাংশের ভেসে গিয়েছে বই-খাতা। এদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। এই অবস্থায় কাঁথির নয়াপুট সুধীরকুমার হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অস্থায়ীভাবে স্কুল চালানোর পরিকল্পনা করেন। সেই মতো স্থানীয় একটি মন্দির প্রাঙ্গণে খোলা আকাশের নীচে শুরু হয় ক্লাস। এগিয়ে আসেন স্থানীয় আরও কয়েকটি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। 


কাঁথির নয়াপুট সুধীরকুমার হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বসন্ত কুমার ঘোড়াই বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সময় স্কুলবাড়িতে সবাই আশ্রয় নিয়েছিল। পরে সবাই ত্রাণ শিবিরে চলে যায়। কিন্তু দুর্যোগে পড়ুয়াদের বই-খাতা ভেসে যাওয়ায় এই স্কুল চালু করা হয়েছে। কাঁথির নয়াপুট সুধীরকুমার হাইস্কুলের নবম শ্রেণি পড়ুয়া তন্ময় মাঝির কথায়, আমাদের বই খাতা সব ভেসে গেছে। এখন প্রধান শিক্ষকের উদ্যোগে আমরা ক্লাস করছি। উনি বই খাতা জোগার করে দিয়েছেন। 


আপাতত চতুর্থ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ১০০ জন পড়ুয়াকে নিয়ে শুরু হয়েছে এই অস্থায়ী স্কুল। পড়ুয়াদের বই-খাতা দিয়ে সাহায্য করছে একটি স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন। দেওয়া হচ্ছে মাস্ক ও স্যানিটাইজারও। এগিয়ে এসেছেন স্থানীয় যুবক-যুবতীরাও। প্রতিদিন বিকেল ৪টে থেকে সন্ধ্যা ৬ পর্যন্ত চলছে ক্লাস।