ঢাকা: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় ৭৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করল বাংলাদেশ সরকার। বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ পরিণত হল ঘূর্ণিঝড়ে। বর্তমানে দিঘা থেকে ৬৩০ কিলোমিটার ও ওড়িশার পারাদ্বীপ থেকে ৫৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে এই ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। দুর্যোগের আশঙ্কায় তাই এবার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বাংলাদেশ সরকার।
ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা অবলম্বনে সিপিপি-র আওতায় দেশের ১৩টি জেলার ৪১টি উপজেলায় মোতায়েন করা হয়েছে স্বেচ্ছাসেবকদের। সিপিপি-র পক্ষ থেকে সংবাদ সংস্থাকে জানানো হয়েছে, উপকূলবর্তী বিভিন্ন এলাকায় ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করার কাজে থাকবেন সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবকরা। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মঙ্গলা বন্দর অঞ্চলে সতর্কতা প্রচার করা হচ্ছে। মৎস্যজীবী সহ নৌকা, ট্রলারকে ফিরে আসতে বলা হয়েছে। মাঝ সমুদ্র সহ সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে যাওয়ার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে নিম্নচাপ। বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেটের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা ও রাজশাহী ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে উপকূলীয় জেলা খুলনা। মূলত উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। বরিশাল সহ দক্ষিণ উপকূলবর্তী এলাকায় দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জরুরি পরিষেবা যেমন বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা নিরবিচ্ছিন্ন রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
উল্লেখ্য, বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ পরিণত হল ঘূর্ণিঝড়ে। বর্তমানে দিঘা থেকে ৬৩০ কিলোমিটার ও ওড়িশার পারাদ্বীপ থেকে ৫৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে এই ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। মৌসম ভবন জানিয়েছে, ক্রমশ উত্তর ও উত্তর পশ্চিম দিকে এগোবে এই ঘূর্ণিঝড়। আজ রাতের মধ্যেই এটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। মঙ্গলবার অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে বুধবার সকালে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বাংলা-ওড়িশা উপকূলে অবস্থান করবে। দুপুরের পর আছড়ে পড়তে পারে পারাদ্বীপ ও সাগরদ্বীপের মাঝে স্থলভাগে। দিঘা থেকে বালেশ্বরের মধ্যে স্থলভাগে ঢোকার সম্ভাবনা প্রবল। স্থলভাগে ঢোকার সময় সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার হতে পারে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আজ কলকাতা ছাড়াও বৃষ্টি হবে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, হুগলি, হাওড়া ও নদিয়া জেলায়। যদিও দিনভর বজায় থাকবে অস্বস্তি। দুপুরের পর থেকে রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে বৃষ্টি শুরু হবে। কাল থেকে দক্ষিণবঙ্গে বাড়বে বৃষ্টি।