দিল্লি : রিপোর্ট বলছে, একবার সুস্থ হয়ে উঠলেও ফের কোভিডে আক্রান্ত হতে পারে তরুণ-যুবরা। এদের থেকেই রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে অন্যের মধ্যে।


সম্প্রতি 'ল্যানসেট রেসপিরেটরি মেডিসিন' জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে নতুন এই রিপোর্ট। যেখানে বলা হয়েছে, যুবক বা যুবতিরা একবার কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে উঠলেও ফের করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। তাঁর শরীরে ভাইরাসের অ্যান্টিবডি থাকলেও ভ্যাক্সিন নেওয়া বাধ্যতামূলক। যুব প্রজন্মের ক্ষেত্রে টিকা নেওয়া বেশি প্রয়োজন। গবেষণা বলছে, টিকা নিলে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়বে। সঙ্গে সংক্রমণ ও ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা কমবে।


এ প্রসঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের 'ইক্যান স্কুল অব মেডিসিন'-এর অধ্যাপক স্টুয়ার্ট সেলফন বলেন,'' একবার সংক্রমিত হলেই রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতার গ্যারান্টি পাওয়া যাবে, বিষয়টা এরকম নয়। একবার যাদের করোনা হয়েছে তাদের ক্ষেত্রেও ভ্যাক্সিন অতিরিক্ত প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে।


মার্কিন নৌবাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে শুরু হয় এই গবেষণা। যেখানে ২,৩৪৬ জন মেরিন কর্পস-এর ওপর এই পরীক্ষা চালানো হয়। বেছে বেছে ফিট যুবকদের এই গবেষণার অঙ্গ করা হয়। যাদের মধ্যে ১৮৯ জনই ছিলেন 'সেরো পজিটিভ'। অর্থাৎ বাহিনীর এই ক্যাডেটসরা আগেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। এমনকী তাঁদের শরীরে সেই অ্যান্টিবডিও মজুত ছিল। গবেষণার শুরুতে ২,২৪৭ জন 'সেরো নেগেটিভ' কেও রাখা হয়।


নতুন নিয়ুক্ত নৌবাহিনীর এই দুই দলের মধ্যে শুরু হয় গবেষণা। ২০২০ সালের মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পর্যবেক্ষেণে উঠে আসে নতুন তথ্য।যেখানে দেখা যায়, এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ১০৯৮ জন ৪৫ শতাংশ নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। 'সেরো পজিটিভ'দের মধ্যে ১৯ জন ( ১০ শতাংশ ) দ্বিতীয়বার করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সেরো নেগেটিভদের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ১০৭৯ জন (৪৮ শতাংশ)।


গবেষণায় উঠে আসে আরও বেশকিছু তথ্য। পর্যবক্ষেণে দেখা যায়, সেরো পজিটিভ দলের মধ্যে যারা ফের করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের অ্যান্টবডি কাউন্ট কমে গিয়েছে। তুলনায় যারা ফের করোনা আক্রান্ত হননি তাদের থেকে 'সেরো পজিটিভ'দের অ্যান্টিবডি লেভেল অনেক কম।সেক্ষেত্রে করোনায় আক্রান্ত হননি এরকম কর্পসদের 'নিউট্রিলাইজিং অ্যান্টিবডি' অনেক কম। 


সর্বশেষে ভাইরাল লোডের বিচারে দেখা যায়, আগে আক্রান্ত হওয়া বাহিনীর কর্পসরা নতুন সংক্রমিতদের থেকে ১০ গুণ কম ভাইরাস ছড়াচ্ছেন। এর থেকে প্রমাণিত হয়, বার বার সংক্রমিত হয়েছেন এমন ব্যক্তিও সমাজে ভাইরাস ছড়াতে সক্ষম। যা স্বাভাবিকভাবেই চিন্তার বিষয়।