রায়পুর: এক বেসরকারি স্কুলে অবিশ্বাস্য ঘটনা। অপছন্দের শিক্ষিকার প্রতি চরম প্রতিশোধ নিতে 'বোমা বিস্ফোরণ'-এর পরিকল্পনা করেছিল ৫ পড়ুয়া। অনলাইনে বোমা তৈরির কৌশল দেখে আজব কায়দায় বোমা বানিয়ে তা রেখেছিল স্কুলের শৌচালয়ে। আর সেখানেই বিস্ফোরণে (School Blast Case) সেই শিক্ষিকার বদলে গুরুতর জখম হয় এক ৯ বছরের কিশোরী ছাত্রী। সোমবার পুলিশসূত্রে জানা গিয়েছে এই ঘটনা। ছত্তিশগড়ের (Chattisgarh School) এক বেসরকারি স্কুলের ৫ পড়ুয়া এই কাণ্ডে জড়িত, এদের মধ্যে ৩ জন ছাত্রীও রয়েছেন। অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে পাঠরত এই পড়ুয়াদের কাণ্ড শুনলে শিহরণ জাগবে।

জানা গিয়েছে, এই পড়ুয়ারা একটি সোডিয়ামের বড় টুকরো রেখে দিয়েছিলেন স্কুলের শৌচালয়ে। আর তাতে জল পড়তেই ভীষণ শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে এবং অজান্তেই নিরপরাধ এক ৯ বছর বয়সী ছাত্রী গুরুতর আহত হন। গত সপ্তাহেই ছত্তিশগড়ের বিলাসপুর থানার অধীনস্থ এই বেসরকারি স্কুলে ঘটেছে এই দুর্ঘটনা। এই ৫ পড়ুয়ার মধ্যে ৪ জনকে পুলিশ ইতিমধ্যেই আটক করেছে, তাদের রিহ্যাব হোমেও পাঠানো হয়েছে। সংবাদমাধ্যমকে বিলাসপুরের এসপি রজনীশ সিং জানিয়েছেন এই পড়ুয়াদের কাউন্সেলিং করানো হবে। পঞ্চম পড়ুয়াকে আর কিছুদিনের মধ্যেই আটক করা হবে, সে তার আত্মীয়ের বাড়িতে রয়েছে এখন। কিছুদিনের মধ্যেই জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের কাছে তাঁকে পেশ করা হবে।

জেলা শিক্ষা আধিকারিকের নেতৃত্বে একটি দল এখন এই ঘটনার তদন্ত করছে যেখানে বেশ কিছু স্কুলের অধ্যক্ষরাও রয়েছেন। তদন্তকারীদের অবাক করেছে স্কুলের এই বিস্ফোরণের ঘটনা। আহতের গায়ে যে রাসায়নিকের ক্ষত হয়েছে এবং ঘটনাস্থলে তীক্ষ্ণ বস্তুর অভাবের কারণে বোঝা যায় এই কাজ কোনও পেশাদারের নয়, এমনকী এটি কোনও বিস্ফোরক বোমাও ছিল না। এই ছাত্রী টার্গেট ছিল না কারও। এসপি রজনীশ সিং জানিয়েছেন যে স্কুলের তরফে পাওয়া সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে ৫ পড়ুয়াকে যারা স্কুলের শৌচালয়ে সোডিয়াম রেখে দিয়েছিল।

তদন্তে জানা যায়, এই পড়ুয়ারা স্কুলের এক শিক্ষিকার আচরণে অত্যন্ত রুষ্ট ছিলেন আর তাই তাঁকে 'উচিত শিক্ষা' দেওয়ার জন্য এই পরিকল্পনা করেছিলেন। সমাজমাধ্যমে তার একটি ভিডিয়ো দেখেন যে কীভাবে জলের সংস্পর্শে আসলেই সোডিয়াম বিস্ফোরণ ঘটায়, অনলাইনে সেই মত এক ছাত্র তার কাকিমার অ্যাকাউন্ট থেকে সোডিয়াম অর্ডার করে আনেন এবং অন্যরা সেটিকে শৌচালয়ের সিস্টার্নে রেখে দেন গোপনে। আর এটাই পরিকল্পনা ছিল যে ফ্লাশ টিপলেই তাতে বিস্ফোরণ ঘটবে।

আর এই পরিকল্পনার ফাঁদে পড়ে জখম হয় এক ৯ বছরের ছাত্রী। শৌচালয়ে গিয়ে অজান্তেই ফ্লাশ টিপতেই বিস্ফোরণ ঘটে যায়। বাইরে থেকে সেই ভীষণ শব্দ শুনে স্কুলের কর্মীরা, শিক্ষক-শিক্ষিকারা ছুটে আসেন কিন্তু দেখেন যে দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। তারপর দরজা ভেঙে লক্ষ্য করা হয় সেই ছাত্রীটি সারা গায়ে ক্ষত নিয়ে পড়ে আছেন। ছাত্রীর বাবা-মা এফ আই আর দায়ের করেছেন এবং জানিয়েছেন এই কাণ্ডে ধৃতদের উপযুক্ত সাজা না হলে তারা প্রতিবাদে নামবেন।

আরও পড়ুন:Tarantula Bites Pilot Mid-Air: মাঝ আকাশে বিষাক্ত মাকড়শার কামড়, অ্যালার্জি নিয়ে চালকের আসনে পাইলট, তার পর…