নয়াদিল্লি: মায়ের সোনার হার টুকরো করে বন্ধুদের মধ্যে বিলিয়ে দিল এক বালক। সোনার হার যে গায়েব হয়ে গিয়েছে, তা বুঝতেই পারেননি ছেলেটির মা। বুঝতে পারলেন যখন, অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। সহপাঠীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতেই ছেলেটি এই কাণ্ড ঘটায় বলে জানা গিয়েছে।  (Viral News)

Continues below advertisement

চিনের পূর্বে অবস্থিত শাংদং প্রদেশের ঝাওঝুয়াং থেকে ঘটনাটি সামনে এসেছে। আট বছর বয়সি ওই বালক মায়ের সোনার নেকলেস খণ্ড খণ্ড কের বন্ধুদের মধ্যে বিলিয়ে দেয় বলে জানা গিয়েছে। উপহার হিসেবে সেই টুকরো টুকরো অংশ সে সহপাঠীদের হাতে তুলে দেয়। দামি উপহার দিয়ে সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতানোই তার লক্ষ্য় ছিল বলে খবর। (China News)

কিন্তু ছেলে যে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে, তা বুঝতেই পারেননি মা। প্রায় মাস খানেক পর বিষয়টি সামনে আসে। একই স্কুলে পড়ে ছেলেটির দিদি। ভাই নিজের সহপাঠীদের দামি উপহার দিয়েছে, সোনা দিয়েছে, এমনটা গোটা স্কুলে চাউর হয়ে গিয়েছে বলে মাকে জানায় মেয়েটি। এতেই টনক নড়ে মায়ের। কিন্তু তত ক্ষণে সব শেষ। বিস্তর খোঁজাখুঁজি করে হারের একটি খণ্ড হাতে পান তিনি। 

Continues below advertisement

ছেলের উপর রাগ হলেও, গোটা ঘটনায় কার্যত হতভম্ব হয়ে যান মা। ছেলেটির বাবা যদিও রাগ সামলাতে পারেননি। ঘর থেকে সো নিয়ে গিয়ে বিলিয়ে দেওয়ার জন্য ছেলেকে তিনি মারধর করেন বলেও জানা গিয়েছে। ওই সোনা যদিও শেষ পর্যন্ত উদ্ধার করা যায়নি। 

গত ২৮ নভেম্বর ছেলেটির মা সশ্যাল মিডিয়ায় গোটা ঘটনা তুলে ধরেন। তিনি লেখেন, ‘আপনারা হয়ত বাববেন বানানো গল্প, মিথ্য়ে কাহিনি। কিন্তু সত্যি সত্যিই এমন ঘটেছে’। চেপে ধরতে মায়ের নেকলেস খণ্ড খণ্ড করে কেটে বিলিয়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করে ছেলেটি। 

এর পর সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেন ছেলেটির মা-বাবা। দেখা যায়, ড্রয়ার খুলে মায়ের হার বের করে ছেলেটি। প্রথমে লাইটার জ্বালিয়ে নেকলেসটি গরম করে সে, তার পর চিমটি দিয়ে কেটে খণ্ড খণ্ড করে। একটা সময় পর দাঁত দিয়েই কেটে খণ্ড খণ্ড করে নেকলেসটি।

ওই মহিলা জানিয়েছেন, বিয়েতে স্বামী তাঁকে নেকলেসটি উপহার দেন। কোন কোন বন্ধুকে সোনা দিয়েছে, তা মনে করে বলতে পারেনি ছেলেটি। বাকি সোনা কোথায় গেল, তাও মনে করতে পারেনি সে। ঘরবাড়ি ঝেড়ে একটি খণ্ডই উদ্ধার করতে পারেন মা-বাবা। সোনার দাম কত, সে ব্যাপারে কোনও ধারণা আছে কি না, ছেলের কাছে জানতে চান ওই মহিলা। ছেলেটি কিছু বলতে পারেনি। 

বিষয়টি সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে চিনের সোশ্যাল মিডিয়ায়। সোনাদানা ছেলেমেয়ের নাগালের বাইরে রাখা উচিত বলে মন্তব্য করেন কেউ কেউ। ছেলেটি এমন আচরণ করল কেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। 

চিনের হেবেই প্রদেশের এক আইনজীবীকে উদ্ধৃত করে South China Morning Post. তিনি জানিয়েছেন, আট বা তার ঊর্ধ্ব শিশুদের সীমিত ক্ষমতাসম্পন্ন নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হয় চিনে। নিজেদের বয়স এবং সাধ্যের বাইরে কোনো ঘটনা ঘটালে, সেক্ষেত্রে মা-বাবার সম্মতিতেই তাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা যায়। 

বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় রসিকতাও করেছেন কেউ কেউ। তাঁদের মতে, কোনও মেয়েকে সোনা দিয়ে থাকলে, তা উদ্ধার করতে না যাওয়াই ভাল। হতে পারে ভবিষ্যতে সেই মেয়েই বাড়িতে পুত্রবধূ হিসেবে প্রবেশ করবে। ছেলেটিকে এখন থেকে সঠিক পথে চালনা করতে না পারলে, ভবিষ্যতে আরও বিপদ হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন অনেকে।