ইতিহাসে এমন অনেক রাজার নাম পাওয়া যায়, যাঁদের উপস্থিতি ছিল ভয়ঙ্কর। নমানসিকতা ছিল বিষাক্ত। কার্যকলাপ ছিল হিংস্র। তাঁদের বিষাক্ত বলা হত উপমা হিসেবে। সেই সব রাজার গল্প খুবই বিপজ্জনক। কিন্তু গুজরাতে এমন এক রাজা ছিলেন যিনি ছিলেন সত্যিই বিষাক্ত !
মাহমুদ বেগাদার নাম জানেন অনেকেই। যিনি ইতিহাসের সবচেয়ে বিষাক্ত রাজা ছিলেন বলে কথিত আছে। তিনি নাকি এতটাই বিষাক্ত ছিলেন, যে মশা কামড়ালে সেই মশাটাই মরে যেত। এমনকি তার শরীরে যে মাছি বসত তাও মারা যেত। মাহমুদ বেগাদা জন্মগতভাবে বিষাক্ত না হলেও শত্রুদের হাত থেকে বাঁচতে ছোটবেলা থেকেই একটু একটু বিষপান করতে শুরু করতেন।
মাহমুদ বেগাদার শরীরে এমন বিষ এল কীভাবে !
মাহমুদ বেগাদা সম্পর্কে কথিত আছে যে, তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীরা শৈশব থেকেই তাঁকে বিষপান করাতেন, যাতে কেউ তাকে বিষ খাইয়ে হত্যা করতে না পারে। তবে এর ফলে তাঁর সারা শরীর এমনকী রক্তও বিষে ভরে গিয়েছিল। কিন্তু তিনি সেই বিষ নিয়ে বেঁচে ছিলেন কী করে তা অবশ্য জানা নেই।
তিনি নাকি এতটাই বিষাক্ত ছিলেন, যে মশা, মাছিও তাঁর সংস্পর্শে এলে মারা যেত। এই কারণে, যখন একটি মাছি তাঁর শরীরে বসত, তখনই সেটি মরে যেত। কথিত আছে, শৈশবে তাঁকে হত্যা করার জন্য কেউ তাঁকে বিষ খাইয়েছিল, কিন্তু তিনি মারা যাননি। এরপর খাবারের সঙ্গে বিষ খাওয়া শুরু করেন।
কে ছিলেন এই মাহমুদ বেগাদা
মাহমুদ শাহ মাহমুদ বেগাদা নামে পরিচিত ছিলেন। তাঁর পুরো নাম ছিল 'আবুল ফাতহ নাসির-উদ্দিন মাহমুদ শাহ প্রথম। মাহমুদ বেগাদা ছিলেন গুজরাতের ষষ্ঠ সুলতান। খুব অল্প বয়সেই তাঁকে সিংহাসনে বসানো হয়। তিনি ১৪৯৮ থেকে ২৫ মে থেকে ১৫১১ র ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত গুজরাত শাসন করেছিলেন। তিনি গুজরাতের সুলতানদের মধ্যে সবচেয়ে বিশিষ্ট ছিলেন। তিনি যখন সিংহাসনে বসেন তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৩ বছর, তিনি ৫২ বছর বয়স পর্যন্ত রাজত্ব করেন।
কথিত আছে এই সুলতান আশেপাশের লোকদের আতঙ্কে রাখার জন্য এবং তাঁর শত্রুদের মনে ভয় সঞ্চার করতে ওই রকম একটি বহিরঙ্গ তৈরি করেছিলেন। তাঁর বিশেষ জীবনযাপন এবং পোশাকের কারণে তাঁকে দেখতেও ভয়ঙ্কর মনে হত। কথিত আছে যে তাঁর দরবারের পার্ষদরাও একই রকম পোশাক পরিধান করতেন, যাতে তাঁদের সবাইকে বিপজ্জনক দেখায়।