কলকাতা: শুধুমাত্র অপু-দুর্গাই নয়, প্রথম বার রেলগাড়ি দেখার অভিজ্ঞতা গেঁথে রয়েছে আমাদের সকলের মনেই। গ্রামেগঞ্জে বড় হয়েছেন যাঁরা, রেললাইন ধরে হেঁটে যাওয়ার অভিজ্ঞতাও রয়েছে তাঁদের। লাইনের পাতের ফাঁকে ব্যবধান থাকে কেন, বিজ্ঞানের বইতে পড়ে ফেলেছি তা-ও। কিন্তু রেললাইনের উপর পাথর বিছনো থাকে কেন, তা কখনও ভেবে দেখেছেন? এর পিছনেও রয়েছে বিজ্ঞান (Stones on Railway Tracks)।
এবড়ো খেবড়ো পাথরকে একত্রে ব্যালাস্ট বলা হয়
রেললাইনের উপর যে পাথর বিছনো থাকে, এবড়ো খেবড়ো সেই পাথরকে একত্রে ব্যালাস্ট বলা হয়। লাইনের দুই পাশে, মাটির উপর বিছনো স্লিপারের মাঝে মাঝে এই পাথর ফেলে রাখা হয়। স্লিপারের উপর বসানো হয় লোহার পাতের রেললাইন। সেই লোহার পাত ধরে রাখে স্লিপার। তারই ভিত্তি তৈরি করতে ব্যবহৃত হয় পাথর (Ballast Stones)।
এর নেপথ্যে যে কারণ উছঠে এসেছে, তা হল, স্লিপারগুলি মোটামুটি আয়তকার হয়। দুই লাইনের মাঝে উল্লম্ব ভাবে সেগুলি পাতা থাকে। আগে এই স্লিপার কাঠের তৈরি হতো। এখন সবই কংক্রিটের। কোনও ভাবে যাতে স্লিপার নড়ে না যায়, তার জেরে ট্রেন চলাচলের সময় লাইন যাতে এদিক ওদিক না হয়, তার জন্যই পাথর ফেলা হয়। এই পাথর মাটির উপর শক্তভাবে স্লিপারকে ধরে রাখতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: Air Ticket Prices: নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করল Go First, বিমানযাত্রা আরও মহার্ঘ হওয়ার আশঙ্কা
রেললাইনের এই পাথরও সর্বত্র একই রকমের হয়। যে কোনও পাথর ব্যবহার করা যায় না। নুড়ির মতো, মসৃণ এবং গোলাকার পাথর হলে, তা গড়িয়ে যেতে পারে। ট্রেন যাওয়ার সময় পরস্পরের সঙ্গে ঘষা লেগেও নড়ে যেতে পারে। তাই স্লিপার ধরে রাখার জন্য যে সাপোর্টের প্রয়োজন, সেই উদ্দেশ্য সফল হবে না। এবড়ো খেবড়ো পাথর এক্ষেত্রে খাঁজে আটকে গিয়ে সেঁটে থাকে। নড়ে যায় না। তাই একই রকমের কালো পাথর ব্যবহার করা হয়।
একই রকমের কালো পাথর ব্যবহার করা হয় রেললাইনে
ট্রেনের ভারী ওজন বইতে, রেললাইনকে সাপোর্ট জোগানোই নয় শুধু, আরও গুণ রয়েছে এই ব্যালাস্ট পাথরের। পাথর বিছনো থাকার ফলে লাইনের উপর গাছ-গাছালি গজিয়ে উঠতে পারে না। ফলে মাটি নড়বড়ে হয় না একেবারেই। পাথর বিছিয়ে রাখার ফলে বৃষ্টির জলে লাইনের নীচের মাটি ভেজে না এবং নরম হয়ে যায় না।