মেক্সিকো সিটি: ঠিক যেন 'জীবিত ও মৃত' গল্পের মতো। তাতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন, 'কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিল, সে মরে নাই'। মেক্সিকোর (mexico) তিন বছরের খুদের গল্পটাও অনেকটা যেন সেরকম। কিন্তু শেষটা একটু অন্য রকম হতে পারত নাকি? 


কী হয়েছে?
'ভিলা দে রামোস'-র বাসিন্দা তিন বছরের এক খুদে হঠাতই পেটব্যথা (stomach ache), বমি (vomit), জ্বরে (fever( ভুগতে শুরু করায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। চিকিৎসকরা জানান, পেটে কোনও একটি সংক্রমণ হয়েছে তার। তবে হাসপাতালে ভর্তি করা সত্ত্বেও অসুস্থতা কমেনি, বরং দ্রুত শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। একসময়ে তাকে 'মৃত' বলে ঘোষণাও করে দেন চিকিৎসকরা। পর দিন, শেষকৃত্যের সময় হঠাতই শিশুটির কফিনে বিন্দু বিন্দু জলীয় বাষ্প দেখতে পান এক জন। সন্দেহ দানা বেঁধেছিল তখনই। একটু পরে পরিবারের এক সদস্য দেখেন, খুদের চোখের পাতা নড়ছে। এতেই শেষ নয়। চমকের তখনও আরও বাকি। হঠাতই খুদের 'পালস'-ও পান এক জন। তা হলে কি এখনও জীবনের কিছুটা বাকি রয়ে গিয়েছে? আশায় বুক বেঁধে দ্রুত খুদেকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা তাকে ফেরানোর চেষ্টাও করেন। কিন্তু এবার আর ফেরানো যায়নি। মৃত্যুর কারণ হিসেবে লেখা হয়, 'সেরিব্রাল এডিমা।'


শোকস্তব্ধ পরিবার...
তিন বছরের সন্তানের জীবন-মৃত্যু নিয়ে এমন টানাপড়েনে স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষুব্ধ পরিবার। মৃতের মা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। তাঁর খেদ, প্রথম যখন খুদেকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল তখনই চিকিৎসা শুরুতে দেরি করেছিলেন ডাক্তাররা। অক্সিজেন দিতেও অনেক দেরি করা হয়েছিল। শেষমেশ অক্সিজেন চালু হলেও তার থেকে মিনিটদশেক পরে আইভি ফ্লুইড দেওয়া শুরু হয়। সব মিলিয়ে বিপুল দেরি। তবে স্বাস্থ্যকর্মীদের কারও বিরুদ্ধে কোনও ব্যক্তিগত রাগ নেই মৃতের মায়ের। শুধু চান, এমন আর কখনও যেন কারও সঙ্গে না হয়। আশা-আশঙ্কার দোলাচলের ওই কয়েকঘণ্টা যে কী ভাবে কেটেছে, সেটা এখও ভুলতে পারছেন না তিনি।
হয়তো কোনও দিনও ভুলতে পারবেন না। ঠিক যেমন গল্পের কাদম্বিনীকে পাঠকরা ভুলতে পারেননি। তবে খুদের মৃত্যু নিয়ে এমন টানাপড়েন? এখনও ভাবতে পারছেন না পরিজনরা।  


আরও পড়ুন:ঝাড়খণ্ডের বিধায়কের থেকে টাকা উদ্ধারের তদন্তে অসমের ব্যবসায়ীকে আজ ফের তলব সিআইডি-র