কলকাতা: বিশ্বের যে কোনও মানুষ জন্ম থেকেই বেশ কিছু অধিকার ভোগ করেন। আন্তর্জাতিক আইন তাঁকে সেই সুবিধা দেয়। বেঁচে থাকা, নিরাপত্তা পাওয়া-সহ একাধিক অধিকার রয়েছে তাঁর। সেই অধিকারের কথা মনে রেখেই বছরের একটি দিন বিশ্বজুড়ে পালিত হয় বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। নাগরিকত্ব, ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী বা এমন যে কোনও কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতার কথা তুলে ধরতেই এই দিনটি পালন করা হয়।
আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীগুলি এই দিনটি নানাভাবে পালন করে থাকে। মানবাধিকা রক্ষার বিষয়টিও ফের মনে করানো হয়। বিচার, সাম্যতা, শান্তি- এসবের জন্য়ও মানবাধিকার বিষয়টি ভাল করে জানা এবং বোঝা প্রয়োজন।
২০২৩ সালে বিশ্ব মানবাধিকার দিবসের থিম হচ্ছে 'সকলের জন্য স্বাধীনতা, সাম্য এবং বিচার'। শুরুর দিন থেকে যতদিন পেরিয়েছে সারা বিশ্বে ততই গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে মানবাধিকার (Human Rights) বিষয়টির। বিশ্বের যে কোনও কোণে অত্যাচারিত জনগোষ্ঠী, পরিযায়ী, শরণার্থী (Refugee), আদিবাসী গোষ্ঠী, বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের অধিকার রক্ষার জন্য এখন যা যা আইন করা হয়েছে, যা যা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে- তার পিছনে ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে UDHR বা UN-এর নেওয়া Universal Declaration of Human Rights.
ইতিহাসের খোঁজ:
১৯৪৮ সালে এই দিনেই Universal Declaration of Human Rights ব়্যাটিফাই করেছিল ইউনাইটেড নেশনসের জেনারেল অ্যাসেম্বলি (United Nations General Assembly)। তারপরে ১৯৫০ সালে ইউনাইটেড নেশনসের সাধারণ সভায় রেজোলিউশন গৃহীত হওয়ার পর থেকে এই দিনে শুরু হয় বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালন। সব সদস্য দেশকে এবং উৎসাহী সংস্থা ও সংগঠনকে দিনটি পালন করার জন্য বলা হয়েছিল। দিনটির কথা মনে রেখে ১৯৫২ সালের একটি বিশেষ পোস্টাল স্ট্যাম্প তৈরি করেছিল ইউনাইটেড নেশনসের Postal Administration's Commemorative. Declaration of Human Rights- সেই অর্থে কোনও আইন নয়, যা মানতে বাধ্য দেশগুলি। কিন্তু এটিই আন্তর্জাতিক স্তরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে লড়ার হাতিয়ার। পাশাপাশি দেশগুলিতে মানবাধিকার রক্ষার আইন তৈরির সময়েও দেখা হয় এই Declaration.
প্রতিটি ব্যক্তি যে জন্মগত ভাবে বেশ কিছু অধিকার অর্জন করে সেই বিষয়টিই মনে করায় বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। শুধু মৌলিক অধিকারের বিষয়টিই নয়, সেই অধিকার নিয়ে বাকিরা যাতে সচেতন হয় এবং অধিকার রক্ষার বিষয়টি নিয়ে সচেতন হয় তার কথাও প্রচার করা হয় এই দিনটিতে। সব দেশের সরকার, আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী ও সংস্থাগুলিকে মানবাধিকারের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়। ন্যায় ও সম্মানের বার্তা দেওয়া, ধর্ম-বর্ণ-ভাষা-গোষ্ঠীর উপর ভিত্তি করে যাতে কোনওরকম বৈষম্য না করা হয় তার বার্তাও দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: আবেগপ্রবণ, মাথা নামিয়ে চোখের জল মুছছেন; কী এমন হল দৌর্দণ্ডপ্রতাপ কিম জং উনের ?