ইয়ংইয়াং : চোখে জল। দেখে খুব আবেগপ্রবণ মনে হচ্ছিল। বিগত সময়ে যেভাবে তাঁকে দেখা যায়নি। ক্যামেরার সামনে তো নয়ই। এহেন উত্তর কোরিয়ার শাসকের চোখে জল নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই কৌতূহল জেগেছে মানুষের মনে। কী এমন হল ? রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশে জন্মহার কমতে থাকায় তিনি চিন্তিত। মহিলাদের কাছে তিনি আর্জি জানান, আরও সন্তানের জন্ম দিতে হবে। দেশের এই সংকটজনক পরিস্থিতির মোকাবিলায় তিনি প্রচেষ্টার আর্জি জানান। সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে, মাথা নামিয়ে চোখের জল মুছছেন দৌর্দণ্ডপ্রতাপ কিম জং উন।


রবিবার উত্তর কোরিয়ার ইয়ংইয়াংয়ে মায়েদের জন্য একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রের খবর, সেখানেই কিম বলেন, 'আমাদের যেটা করতে হবে, জন্মহার কমে যাওয়া ঠেকাতে হবে এবং বাচ্চাদের যথাযথ যত্ন নিতে হবে।' এর পাশাপাশি তিনি রাষ্ট্রের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে মায়েদের ভূমিকার কথা তুলে তাঁদের ধন্যবাদ জানান। কিম বলেন, 'যখন দল এবং রাষ্ট্রের কাজ সামলাতে গিয়ে আমি হিমশিম খাই, তখন আমিও মায়েদের কথা ভাবি।'


ইউনাইটেড নেশনস পপুলেশন ফান্ডের অনুমান অনুযায়ী, ২০২৩ সালে উত্তর কোরিয়ায় গড় জন্মহার ১.৮ । সাম্প্রতিক সময়ের যে পরিসংখ্যান চিন্তা বাড়াচ্ছে। উত্তর কোরিয়ায় প্রতিবেশী কিছু রাষ্ট্রে অবশ্য ফার্টিলিটি রেট বেশি। যদিও সেইসব দেশেও এর নিম্নগামী গ্রাফ দেখা গেছে। এপ্রসঙ্গে বলা যেতে পারে, দক্ষিণ কোরিয়ার কথা। সেখানে ফার্টিলিটি রেট রেকর্ড হারে কমেছে। গত বছর ০.৭৮-এ নেমে এসেছিল এখানকার জন্মহার। এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি শহরে জন্মহার বাড়াতে ম্যাচ-মেকিংয়ের আয়োজন করা হয়।


অন্যদিকে, জাপানের পরিস্থিতিও তথৈবচ। এখানে জন্মহার নামে ১.২৬-এ। এদিকে গত জুলাই মাসে জানা যায়, জাপানে দ্রুত গতিতে কমছে জাপানির সংখ্যা। অন্যদিকে, বিদেশি নাগরিকদের বসবাসের সংখ্যা বাড়ছে উত্তরোত্তর হারে। সেই সময়ের হিসাব অনুযায়ী, জাপানে প্রায় ৩০ লক্ষ বিদেশি বসবাস করেন বলে সেদেশের সরকারি সূত্রের খবর। সরকারি তথ্য বলছে, জাপানে জনসংখ্যার ঘাটতি মেটাতে জাপানিদের থেকে বড় ভূমিকা পালন করছেন বিদেশিরা। গত ১৪ বছর ধরে জাপানে জনসংখ্যা নাগাড়ে কমছে। এই হ্রাসের হার প্রায় ৮ লক্ষ। অথচ কয়েক বছর আগেও ১২ কোটি ২০ লক্ষর বেশি জনসংখ্যা ছিল এই দেশে। এই ক'বছরে এই হারে জনসংখ্যা হ্রাসে স্বাভাবিকভাবেই চিন্তিত সেদেশের সরকার।


এই মুহূর্তে উত্তর কোরিয়ায় জনসংখ্যা প্রায় আড়াই কোটি। সাম্প্রতিক সময়ে যেখানে মারাত্মক খাদ্যাভাবও দেখা যায়। শুধু তা-ই নয়, ১৯৯০-এ এ দেশে নেমে আসে ভয়ঙ্কর দুর্ভিক্ষ। যা প্রায়ই বন্যার জেরে ফসলের ক্ষতির ফলে হতে দেখা যায়।