মুম্বই থেকে কলকাতাগামী ইন্ডিগো বিমানে সহযাত্রীর কাছে চড় খাওয়ার পর থেকে অসমের কাছাড় জেলার এক যুবককে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না। আর এই ঘটনার ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে নেটিজেনদের মধ্যে। বিমান সফরের সময় যাত্রীদের নিরাপত্তা ও মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠেছে।
নিখোঁজ এই যুবকের নাম জানা গিয়েছে হোসেন আহমেদ মজুমদার। তিনি মুম্বই থেকে দক্ষিণ অসমে কাটিগোড়া শহরে তাঁর নিজের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। মুম্বইয়ের একটি জিমে কাজ করেন তিনি, কলকাতা থেকে একটি সংযোগকারী বিমানে তাঁর ওঠার কথা ছিল। তবে তিনি সেই বিমানে অসমে পৌঁছাননি, তাঁর ফোনও বন্ধ। ধারণা করা হচ্ছে যে মুম্বইতেই তাঁকে ফেলে রাখা হয়েছে। এই যুবকের অস্বাভাবিক নিখোঁজ হওয়াকে ঘিরে চাঞ্চল্য দানা বেঁধেছে।
বিমান যখন মাঝ আকাশে সেই সময় একটি বাক-বিতণ্ডার ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে হোসেন আহমেদ মজুমদার নামের এই ব্যক্তি রীতিমত ভয় পেয়ে রয়েছেন, বিমানের পরিচারিকারা তাঁকে তাঁর আসনে নিয়ে যাচ্ছেন। আর এই সময়েই এক সহযাত্রী তাঁকে হঠাৎ থাপ্পড় মারেন। এর ফলে ক্রু সদস্য ও অন্যান্য যাত্রীরা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখান। সেই ব্যক্তিকে তিরস্কার করেন সকলে। সম্ভবত অনেকেই মনে করছেন বিমান ওড়ার সময় তিনি কোনও কারণে আতঙ্কিত হয়ে থাকতে পারেন।
শিলচর বিমানবন্দরে তাঁর অপেক্ষায় থাকা পরিবারের সদস্যরা অবাক হয়ে যান কারণ সেই যুবক বিমান থেকে নামেননি। তাঁর আত্মীয় জুবাইরেল ইসলাম মজুমদার জানান যে শিলচরের বিমানে তাঁকে খুঁজে না পেয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়, বিমানবন্দরের কাছে উধারবন্দ থানাতেও যাওয়া হয়। কিন্তু কোনওভাবেই তাঁর অবস্থান সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য জানা যাচ্ছে না। হোসেনের বাবা আবদুল মান্নান মজুমদার যিনি বর্তমানে ক্যানসারে আক্রান্ত, অত্যন্ত মুষড়ে পড়েছেন ছেলের নিখোঁজ হওয়ার কথা শুনে।
ইতিমধ্যেই ইন্ডিগো বিমান সংস্থার পক্ষ থেকে এক্স হ্যান্ডলে জানানো হয়েছে, ‘আমাদের একটি ফ্লাইটে শারীরিক সংঘর্ষের ঘটনা সম্পর্কে আমরা অবগত। এই ধরনের অবাধ্য আচরণ সম্পূর্ণরূপে বর্জনীয়। আমাদের ক্রু সদস্যরা প্রতিষ্ঠিত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি অনুসারে কাজ করেছে। জড়িত ব্যক্তিকে অবাধ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং পৌঁছানোর পর নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
বিধাননগর পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে মুম্বই থেকে কলকাতাগামী ফ্লাইট 6E-138-এ হোসেন আহমেদ মজুমদারকে চড় মারেন হাফিজুল রহমান নামের এক ব্যক্তি। তাঁকে অবাধ্য চিহ্নিত করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তাঁর বিরুদ্ধে।