নয়াদিল্লি: সবুজে ঢাকা উপত্যকায় সাজানো গোছানো বাড়ি। পিছনে গগনচুম্বী পাহাড়-পর্বত, সামনে কুলকুল শব্দে বয়ে যাওয়া নদী। এমন পরিবেশে থাকতে চাইলে সুবর্ণ সুযোগ দিচ্ছে ইতালি। সর্বস্ব বিক্রি করে সেখানে গিয়ে লড়াই করতে হবে না, বরং সুষ্ঠ ভাবে যাতে সংসার পাতা যায়, তার জন্য মোটা টাকাও দেবে দেশের সরকার। ছবির মতো সাজানো দেশে থাকতে চাইলে আবেদন করতে হবে। শুধু মেনে চলতে হবে কয়েকটি শর্ত। (Viral News)
ইতালির উত্তরে অবস্থিত স্বতন্ত্র প্রদেশ ত্রেন্টো। আল্পস এবং ডলোমাইট পর্বতশ্রেণির মিলনস্থল ওই অঞ্চল। কিন্তু ছবির মতো সাজানো পরিবেশে বহু বাড়িই খালি পড়ে রয়েছে। সেখানে থাকতে চাইলে ইতালি সরকার মোট ১ লক্ষ ইউরো অর্থসাহায্য় দেবে, যাতে সেখানে বাড়ি কিনে, সংস্কার করে থাকা যায়। ভারতীয় মুদ্রায় ১ লক্ষ ইউরো প্রায় ৯২ লক্ষ ৯৯ হাজার টাকা। তবে একটি শর্তও দিয়েছে ইতালি সরকার। ওই টাকায় বাড়ি কিনে অন্তত পক্ষে ১০ বছর সেখানে থাকতেই হবে। নিজে না থাকলে, ভাড়াটে বসাতে হবে ১০ বছরের জন্য। অন্যথায় ফেরত দিতে হবে টাকা। (Italy Depopulation)
ওই অঞ্চলের মোট ৩৩টি অঞ্চলের জন্য এমন প্রকল্প নিয়ে আসছে ইতালির সরকার। ধাপে ধাপে অনুমোদন মিলবে। কিন্তু টাকা দিয়ে বাসিন্দাদের আকর্ষিত করার এমন পন্থা কেন? জানা গিয়েছে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে কোনও খামতি না থাকলেও, মানুষজন জনবহুল শহুরে এলাকায় উঠে গিয়েছেন। ফলে সেখানে পর পর বাড়ি খালি পড়ে রয়েছে। এই মুহূর্তে যত বাসিন্দা রয়েছেন সেখানে, তার চেয়ে খালি পড়ে থাকা বাড়ির সংখ্যা বেশি। কোথাও আবার বয়স্ক জনসংখ্য়া বেশি হয়ে গিয়েছে, ফলে স্কুল-কলেজ, দোকান-বাজার, পেট্রোল পাম্প থাকলেও, সেখানে যাওয়ার লোক নেই।
ইতালি সরকারের মতে, এভাবে চলতে থাকলে ইতালির গ্রাম্য জীবন বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তাই গ্রাম ধরে রাখতেই খালি বাড়িগুলি ভরানোর চেষ্টা। ২০২৪ সালেই সেই মত বাজেট পাস হয় ইতালির সংসদে, যাতে মোটা টাকার বিনিময়ে সেখানে বাসিন্দাদের থাকতে আগ্রহী করে তোলা যায়। যে সমস্ত এলাকায় বাসিন্দার সংখ্যা ৫০০০-এর কম, সেখানেই এই প্রকল্প রূপায়ণের পরিকল্পনা রয়েছে। জনসংখ্যা কম হওয়ার দরুণ ওই সমস্ত অঞ্চল অর্থনৈতিক ভাবে এবং সামাজিক ভাবে পিছিয়ে পড়েছে বলে মত সরকারের।
এর আগে, দক্ষিণ ইতালির জনসংখ্যা বৃদ্ধি করতে ১ ডলারে বাড়ি বিক্রির পন্থা নিয়েছিল ইতালি সরকার। এবার সেই টাকার অঙ্ক কল্পনাতীত ভাবে বাড়ানো হয়েছে। ১০ বছরের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে, যাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ করা যায় ওই অঞ্চলগুলিকে। তবে চাইলে কেউ গোটা গ্রাম কিনে নিতে পারবেন না। এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ তিনটি সম্পত্তির মালিক হতে পারেন।