কলকাতা: সাফল্যের পথ কখনও মসৃণ হয় না। পদে পদে থাকে বাধা। তা পেরিয়েই অনেকের মুখেই ফোটে জয়ের হাসি। ব্যবসায়ী ভবেশ ভাটিয়ার গল্পটাও খানিকটা এমনই। ২৩ বছর বয়সে ঝুপ করে নেমে আসে অন্ধকার। হঠাৎ চলে যায় দৃষ্টিশক্তি। তারপর শুরু লড়াই। বর্তমানে ৩৫০ কোটি টাকার মালিক ভবেশ ভাটিয়া। একটা ছোট্ট গাড়িতে মোমবাতি বিক্রি করেই যাত্রা শুরু।                   


২৩ বছর বয়সে হঠাৎই দেখা দেয় রেটিনার সমস্যা। তারপর ধীরে ধীরে চলে যায় দৃষ্টিশক্তি। স্নাতকোত্তর পর্যন্ত পড়াশোনা করলেও দৃষ্টিশক্তি চলে যাওয়ার কারণে মেলেনি চাকরি। তবে তাঁকে বরাবর সাহস জুগিয়েছেন তাঁর মা। কিন্তু ভাগ্যের এমনই পরিহাস যে মাকে হারালেন অল্প বয়সেই। মারণ রোগ ক্যান্সার কেড়ে নেয় তাঁর মাকে। বাবার যেটুকু জমানো টাকা ছিল সবই খরচ হয়ে যায় মায়ের চিকিৎসায়। মায়ের মৃত্যুর পর থেকে অবসাদ গ্রাস করতে শুরু করে। এদিকে আয়ের উৎসও নেই। সিদ্ধান্ত নেন মোমবাতি বানানো শিখতে হবে। ভর্তি হন ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য ব্লাইন্ড স্কুলে।            


প্রশিক্ষণ শেষে কাজের সন্ধান শুরু করেন। বন্ধুর থেকে ৫০ টাকার বিনিময়ে মোমবাতি বিক্রি করা শুরু করেন। মোমবাতি বিক্রি করে যে লাভ হত, তার ২৫ শতাংশ সঞ্চয় করতেন তিনি। এই মোমবাতি বিক্রি করতে গিয়েই তাঁর জীবনে আলোর সূচনা। পরিচয় হল নীতার সঙ্গে। দুজনে মিলে কাঁধ কাঁধ মিলিয়ে শুরু হল লড়াই। বিয়ে করলেন তাঁরা। তারপর ভবেশ মোমবাতি বানাতেন। আর সেই মোমবাতি বিক্রির দায়িত্ব ছিল নীতার উপর। 


ধীরে ধীরে বাড়তে ব্যবসা। ছোট গাড়ি, স্কুটার তারপর ভ্যানে মোমবাতি বিক্রি করেন। ১৯৯৪ সালে সানরাইজ ক্যান্ডেল সংস্থার যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে এই সংস্থার বর্তমান বার্ষিক আয় ৩৫০ কোটি টাকা। সারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্রেতারা আসেন। প্লেন, সুগন্ধি, জেল, ভাসমান এবং ডিজাইনার মোমবাতি সহ বিভিন্ন ধরনের মোমবাতি বিক্রি করে। বর্তমানে এই কোম্পানিতে প্রায় ৯ হাজার প্রতিবন্ধী কাজ করেন। ভবেশের স্ত্রী নীতা তাঁদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দেন। প্রায় ১২ হাজার রকমের মোমবাতি বিক্রি করে এই সংস্থা। পাশাপাশি মোমবাতি রফতানি করে থাকে ৫২ বছর বয়সী ভাটিয়ার সংস্থা।  


আরও পড়ুন: Viral News: এই অফিসে ঢুকলে পরতেই হয় হেলমেট! কেন?