কলকাতা: ভারতের (India) দক্ষিণের রাজ্য কেরলের (Kerala) এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম। অর্থের অভাবে বেশিদূর পড়াশোনা করতে পারেননি। পরিবারের তিন বেলার অন্ন সংস্থান করতে মাত্র ১১ বছর বয়সে স্কুল ছেড়ে বাবার সঙ্গে শস্য পরিবহনের কাজে যোগ দিতে হয়েছিল জর্জ ভি নেরামপারামবিলের।                     


বয়স খানিকটা বাড়ার পরও কিছুদিন শ্রমিকের কাজ করেছেন কেরলায়। পরে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় ১৯৭৬ সালে দুবাইয়ে শারজায় পাড়ি জমান জর্জ। সেখানে শ্রমিকের কাজে যোগ দেন। অল্প সময়ের মধ্যেই দুবাইয়ে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক লাভের আঁচ করতে পেরেছিলেন তিনি। তখন সৌদি বিশ্বের ধনকুবেরদের বসবাসের উপযোগী দেশ হিসেবে মাত্র গড়ে উঠতে শুরু করেছে।                                               


আশির দশকের শুরুর দিকে দুবাইয়ে এসির ব্যবসা শুরু করেন জর্জ। তারপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। দিনে দিনে দুবাইয়ে যত মানুষ বেড়েছে, তত বেড়েছে এয়ার কন্ডিশনারের চাহিদা। সেই সঙ্গে ফুলে-ফেঁপে উঠেছে জর্জ ভি নেরামপারামবিলের বাণিজ্য। একসময় এয়ার কন্ডিশনারের পাশাপাশি ভবন নির্মাণ ও ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসাতেও মনযোগ দেন জর্জ। বর্তমানে তিনি জিইও গ্রুপ অব কোম্পানিজের মালিক। এই গ্রুপ অব কোম্পানিজের অন্তর্ভুক্ত প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই নিয়মিত মুনাফা করছে।


এর পাশাপাশি তিনি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ও অভিজাত বহুতল আবাসিক ভবন বুর্জ খলিফার ২২টি অ্যাপার্টমেন্টের মালিক। এর পেছনে অবশ্য একটি মজার গল্প রয়েছে। ২০০৯ সালে যখন এই ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হয়, সে সময় জর্জের এক আত্মীয় তাকে ঠাট্টা করে বলেছিলেন— জর্জ কখনও ওই ভবনে ঢুকতে পারবেন না। 


আরও পড়ুন, এই ছবিতে কোন বিষয়টি আগে চোখে পড়ছে? উত্তরই বলে দেবে আপনি কেমন মানুষ!


পরের বছর ২০১০ সালেই বুর্জ খলিফার একটি ভবনে ভাড়াটে হিসেবে ওঠেন জর্জ; আর তার পরের বছর ওই ভবনের ২২টি অ্যাপার্টমেন্টে কিনে নেন তিনি।


প্রসঙ্গত, বুর্জ খলিফায় মোট ৯০০ অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে ১৫০টির মালিক ভারতীয়রা। সেই ভারতীয়দের মধ্যেই একজন জর্জ ভি নেরামপারামবিল, একসময় দারিদ্র্যের কারণে যাকে পড়াশোনা ও দেশ ছাড়তে হয়েছিল।