নয়াদিল্লি: বাবা-মায়ের ধর্মাচরণের দায় চাপল একরত্তির উপরও।  মাত্র দু'বছর বয়সে যাবজ্জীবনের সাজা হল তার। ভূ-ভারতে না হলেও,এ ই পৃথিবীতেই ঘটল এমন ঘটনা। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা সামনে আনল আমেরিকা। উত্তর কোরিয়ায় (North Korea) দু'বছরের এক শিশুকে যাবজ্জীবনের সাজা দেওয়া হয়েছে বলে জানাল তারা। শুধু তাই নয়, বন্দিশিবিরে ওই শিশুটির ঠাঁই হয় বলে জানা গিয়েছে (Viral News)।


প্রতি বছর নিয়ম করে আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা রিপোর্ট প্রকাশ করে আমেরিকার বিদেশ বিভাগ। ২০২২-এর রিপোর্ট সম্প্রতি সামনে এনেছে তারা। তাতেই এই ঘটনার উল্লেখ রয়েছে। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই দু'বছরের শিশুটির মা-বাবার কাছ থেকে একটি 'বাইবেল' উদ্ধার হয়। তাতে তাঁরা খ্রিস্টধর্মের উপাসক বলে ধরে নেয় উত্তর কোরিয়ার সরকার। তাতে ওই দম্পতির তো শাস্তি হয়ই, সাজা দেওয়া হয় দু'বছরের শিশুটিকেও। 


ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ধর্মাচারণের জন্য এবং বাইবেল রাখার জন্য গোট পরিবারকে গ্রেফতার করে উত্তর কোরিয়ার পুলিশ। বাদ যায়নি দু'বছর বয়সি শিশুটিও। ২০০৯ সালে তাকে যাবজ্জীবনের সাজা শোনানো হয়। পাঠানো হয় রাজনৈতিক বন্দিশিবিরে। ওই বন্দিশিবিরের দুর্দশা, অত্যাচারের কথা সামনে এনেছেন উত্তর কোরিয়া থেকে প্রাণ হাতে করে পালিয়ে বেরনো খ্রিস্টানরাও। 


আরও পড়ুন: The Diary of West Bengal: বাংলাকে বদনামের চেষ্টা! আগেই সরব হন মমতা, ‘দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’ ছবির পরিচালককে এবার তলব


ধর্মাচরণ নিয়ে উত্তর কোরিয়ায় কঠোর বিধি রয়েছে। তাকে ব্যবহার করে সে দেশের সেনা সাধারণ মানুষের উপর অকথ্য অত্যাচার চালায় বলে অভিযোগ। খ্রিস্টান ছাড়াও, সনাতনী জলপোড়া, তুকতাকে বিশ্বাস করেন যাঁরা, তাঁরাও নির্যাতনের শিকার হন বলে জানা গিয়েছে। নিত্যদিন সেখানে তাঁদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয় বলে জানানো হয়েছে রিপোর্টে, যার ৯০ শতাংশই সেনাবাহিনীর দ্বারা ঘটিত বলে দাবি।


ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে উত্তর কোরিয়ায় ৭০ হাজারের বেশি খ্রিস্টান জেলবন্দি রয়েছেন। কিছু অন্য ধর্মাবলম্বী মানুষও রয়েছেন তাঁদের মধ্যে। 'কোরিয়া ফিউচার' নামের একটি অলাভজনক সংস্থার বক্তব্য উদ্ধৃত করে ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ধর্মাচরণে বিশ্বাসী মানুষজনের কাছ থেকে সেই সংক্রান্ত সামগ্রী উদ্ধার হলে, ধর্মীয় কোনও ব্যক্তির সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ ধরা পড়লে, নিদারুণ নিপীড়নের শিকার হতে হয় তাঁদের। গ্রেফতার বা আটক করার চল যেমন রয়েছে, তেমনই শারীরিক অত্যাচার, বিনা বিচারে বন্দি করে রাখা, দীপান্তরে পাঠানো এমনকি যৌন নির্যাতনের শিকারও হতে হয়।