ভোপাল:  সেলফি তুলতে গিয়ে ফোন পড়ে গিয়েছিল জলাধারে। কিন্তু যার তার ফোন নয়, হোমড়াচোমড়া এক সরকারি আধিকারিকের ফোন। দামি ফোন উদ্ধার করতে গোটা জলাধারের প্রায় সব জলই ছেড়ে দিলেন সেই আধিকারিক। একশো-দুশো লিটার নয়। মোট ২১ লক্ষ লিটার জল ওই রিজার্ভার বা জলাধার থেকে ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। ঘটনাস্থল ছত্তীশগঢ়।


ওই জলাধারের জলের উপর নির্ভরশীল বিশাল এলাকার বাসিন্দারা। একটি ফোন উদ্ধারের জন্য তীব্র গরমের মরসুমে এভাবে গোটা জলাধার খালি করে দেওয়ার ঘটনায় কার্যত হতবাক প্রশাসনের একটি বড় অংশ।


ছত্তীশগঢ়ের কাঙ্কের জেলায় একটি ব্লকের ফুড অফিসার রাজেশ বিশ্বাস। ছুটি কাটাচ্ছিলেন খেরকাট্টা ড্যামে। সেখানেই সেলফি তুলতে গিয়ে তাঁর হাত ফস্কে জলাধারে পড়ে যায় তাঁর সাধের ফোন। যার দাম নাকি লক্ষাধিক টাকা। ১৫ ফুট গভীরতার ওই জলাধারে ফোন পড়়ে যেতেই মাথায় হাত পড়ে ওই আধিকারিকের। স্থানীয় কয়েকজন জলাধারে নেমে খোঁজার চেষ্টা করলেও বিফলে যায় সব চেষ্টা। তাতেও হাল ছাড়েননি ওই সরকারি অফিসার। দুটি ডিজেল পাম্প এনে জল তুলে ফেলার কাজ শুরু করেন। টানা ৩ দিন ধরে জোড়া পাম্প চালিয়ে প্রায় খালি করে ফেলা হয় গোটা জলাধার। 


সূত্রের খবর, সোমবার সন্ধে থেকে পাম্প চালানো শুরু হয়েছিল। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা চলেছে সেই পাম্প। এভাবে জল ফেলে দেওয়ার ঘটনায় অভিযোগ পৌঁছেছিল সে রাজ্যের সেচ ও জলসম্পদ দফতরের একটি কর্মীর কাছে, তিনিই পাম্প বন্ধ করান। কিন্তু ততক্ষণে জলের গভীরতা নেমে গিয়েছে ৬ ফুটে। কার্যত নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে ২১ লক্ষ লিটার জল। যা দিয়ে অন্তত ১৫০০ হেক্টর জমিতে ভালভাবে সেচের কাজ করা যেত। গরমের মরসুমেও এই জলাধারে অন্তত ১০ ফুট জল থাকে। পশুরাও এখান থেকে জলপান করে। 


কেন এমন কাজ?
কিন্তু কার অনুমতিতে এমন কাজ করলেন তিনি? স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, রাজেশ বিশ্বাস বলেছেন, 'রবিবার বন্ধুদের সঙ্গে ওখানে গিয়েছিলাম। হাত থেকে ফোন পড়ে যায়। ওই জলাধারের জল কোনও কাজে লাগত না। স্থানীয়রা বলেছিল জলের গভীরতা কমে গেলে তাঁরা খুঁজে দিতে পারবেন। আমি SDO-কে জানিয়েছিলাম। উনিই বলেছেন বেশ কিছু জল ফেলে দিলে সমস্যা হবে না, উল্টে কৃষকদেরই সুবিধা হবে।' ফোনে সরকারি তথ্য রয়েছে বলেও দাবি করেছিলেন রাজেশ।


যদিও স্থানীয় সংবাদমাধ্য়ম সূত্রের খবর, জলসম্পদ দফতরের কর্মীরা জানিয়েছেন, যতটা জল বের করতে বলা হয়েছিল তার চেয়ে অনেক বেশি জল ফেলে দেওয়া হয়েছে। যদিও যার জন্য এতকিছু, ৩ দিন জলের নীচে থেকে সেই ফোন নাকি পুরোই অকেজো হয়ে গিয়েছে।


Hair Care : শুধু ধূলো-বালি নয়, এই বদভ্যাসগুলি চুলকে দুর্বল ও প্রাণহীন করে তোলে !