কলকাতা: বিশ্বে কোথাও না কোথাও নিজের যমজ একজন রয়েছে, সে রহস্যর কথা প্রায়ই শোনা যায়। কিন্তু এমন ঘটনা যে ভারতের এই গ্রামে প্রায়ই দেখা যায়, তা স্বল্পশ্রুতই। ভারতের এমনই এক গ্রাম রয়েছে যার রহস্য আজ পর্যন্ত সমাধান করা যায়নি।
এই গ্রামের রাস্তাঘাটে, খেলার মাঠে, স্কুলে বা অফিসে সর্বত্র জোড়ায় জোড়ায় মুখ দেখতে পাবেন৷ ব্যাপারগুলো যেমন মজার তেমনই আশ্চর্যের৷ কোচি বন্দরের মাত্র ১৫০ কিমি দূরত্বে এই গ্রামে ঢুকে এমনই দেখবেন৷ কোডিনহি, দক্ষিণ ভারতের কেরালা রাজ্যের প্রত্যন্ত একটি গ্রাম৷ কিন্তু বর্তমানে এই গ্রাম বিশ্বজোড়া পরিচিতি পেয়েছে ‘যমজদের গ্রাম' হিসেবে৷ বিজ্ঞানীরাও স্তম্ভিত এখানকার যমজদের ক্রমবর্ধমান জন্মহার দেখে!
এখানে হাজারটি জন্মের মধ্যে ৪২টি জন্মই যমজদের৷ ২০০৮ এর পরিসংখ্যানে তাকালে দেখা যাবে, এই গ্রামে জন্ম নিয়েছিল ২৬৪ যমজ শিশু, সংখ্যাটা বেড়ে এখন ৪৫০ এ দাঁড়িয়েছে৷ সারা বিশ্বে যমজ সন্তান প্রসবের যে হার, কেরালার এই গ্রামে সে হার প্রায় ছয় গুণ বেশি৷
গ্রামের ৮৫ শতাংশ মানুষ মুসলিম হলেও হিন্দুদের মধ্যেও যমজ সন্তান জন্মের হার একইরকম৷ মালাপ্পুরম জেলার কোডিনহি গ্রামের প্রায় প্রতিটি পরিবারেই রয়েছে যমজ ভাই-বোন৷ গ্রামে ঢোকার আগেই সাইনবোর্ডে দেখতে পাবেন, ‘ঈশ্বরের একান্ত আপন যমজদের গ্রাম – কোডিনহি৷'
আরও পড়ুন, রাস্তায় ২৫ লক্ষ টাকা পেয়ে ফেরালেন রিক্সা চালক, পেলেন সততার পুরস্কারও
যদিও সমস্যা যে একেবারে নেই যমজ সন্তান কারও জন্য আনন্দের কারণ এবং কারও জন্য আর্থিক সমস্যার কারণ বলে মনে করেন এই গ্রামের বাসিন্দারা। তাদের উদ্বেগের কারণ হল রাজ্য সরকার এই জাতীয় পরিবারগুলিকে কোনও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা করেনি।
গ্রামটিতে যমজ শিশু জন্মের এই ধারা শুরু হয়েছিল ৬০-৭০ বছর আগে৷ যমজের সংখ্যা এরপর ক্রমেই বেড়েছে৷ দেখা গেছে, বিয়ের পর কোনও মহিলা এই গ্রামে এলে তিনিও যমজ সন্তান প্রসব করছেন৷ যমজের জন্মের এই আশ্চর্য ঘটনা বিশ্বে কেবল কোডিনহিতে নয়, আরও দু'টি গ্রামেও ঘটে৷ নাইজেরিয়ার ইগবো ওরা এবং ব্রাজিলের ক্যানডিডো গডোই নামের গ্রামে৷ এই দু'টি গ্রামের যমজ সন্তান জন্মের ব্যাখা অবশ্য পাওয়া গেছে৷ কিন্তু এই ইন্টারনেটের যুগে এসেও বিজ্ঞানীরা সঠিকভাবে কোডিনহির ব্যাখা দিতে পারছেন না৷ অনেক বিজ্ঞানীও বিশ্বাস করেন যে জেনেটিক কারণেই এমনটা হচ্ছে।