নয়া দিল্লি: কন্যাভ্রূণ হত্যা থেকে ধর্ষণ, মহিলাদের ওপর অত্যাচারের একের পর এক ঘটনায় উত্তাল হয়েছে দেশ। নির্ভয়া থেকে আসিফা, প্রিয়ঙ্কা রেড্ডি, সমাজের একাধিক স্তরের নারীদের ওপর অত্যাচার বারংবার সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে এসেছে। আর সেই দেশেরই একটি গ্রামে মেয়েদের কার্যত মাথায় তুলে রাখা হয়, বৈচিত্র্য এখানেই। 


গ্রামের নাম পিপলান্ত্রি। রাজস্থানের রাজসামান্দ জেলার একটি এলাকা। মরুরাজ্যের দক্ষিণভাগে অবস্থিত এই জেলায় কন্যাসন্তানদের রক্ষার পাশাপাশি সবুজায়নের বন্দোবস্তও করা হয়। গ্রামে প্রতিবার কন্যাসন্তানের জন্ম হলে ১১১টি চারা রোপণ করা বাধ্যতামূলক। শুধু তাই নয়, এই সম্প্রদায় এও নিশ্চিত করে যে এই গাছগুলি যাতে বেঁচে থাকে আজীবন। সম্প্রতি নয়, গত ১৫ বছর ধরে এমনটাই করে আসছেন এই গ্রামের বাসিন্দারা। 


গাছ এবং কন্যা-এখানে একে অপরের প্রতীকী। পরিবার যাতে মেয়েদের মতো করে গাছেদের যত্ন নেন সেই বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয়। গত ছ'বছরে, গ্রামের লোকেরা প্রায় এক কোটিরও বেশি গাছ রোপণ করতে পেরেছে। এর মধ্যে রয়েছে নিম, আম, আমলা-সহ একাধিক গাছ। শুধু তাই নয়, কন্যাসন্তানের জন্মের পর গ্রামবাসী নিজেরাই টাকা জোগাড় করেন। ২১ হাজার টাকা তাঁরা নিজেরা দেন, আরও ১০ হাজার টাকা নেন পরিবারের থেকে। মোট টাকা দিয়ে একটি ফিক্সড ডিপোজিট করা হয় ওই কন্যা সন্তানের নামে। ২০ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত ওই টাকা কোনওভাবেই খরচ করা যায় না। মেয়েরা যাতে ঠিক মতো শিক্ষা পান সেই বিষয়টিও নজরে রাখা হয়। 


কেন হঠাৎ এমন ভাবনা? 






আরও পড়ুন, হোটেল বুকিংয়ে গোয়াকে টক্কর দিল বারাণসী! বাড়ছে OYO রুমের চাহিদাও


এই কথা মনে আসতে পারে অনেকেরই। যে দেশের এই অখ্যাত গ্রামটিতে এমন ভাবনা এল কীভাবে? গ্রামের প্রাক্তন সরপঞ্চ শ্যাম সুন্দর পালিওয়ালের মতে, প্রতি বছর গড়ে ৬০ জন মেয়ে এখানে জন্মগ্রহণ করে।   তার মেয়ে কিরণের স্মরণে এই উদ্যোগটি শুরু করার ক্ষেত্রে তিনি প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছেন। কয়েক বছর আগেই মেয়ে কিরণকে হারিয়েছেন শ্যামসুন্দরবাবু। ১৮ বছর বয়সে ডিহাইড্রেশনের কারণে মারা যান কিরণ। গ্রামের বাকি মেয়েরা যাতে সুস্থ থাকে, এগিয়ে চলতে পারে জীবনে, সেই ভাবনা থেকেই এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।