কলকাতা: বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সের বিজ্ঞানীরা এক আশ্চর্য জিনিস আবিষ্কার করে ফেলেছেন। এখনও পর্যন্ত ঘর-বাড়ি তৈরিতে সিমেন্টের সঙ্গে বালি মিশিয়েই কাজ করা হয়। এবার আর বালি লাগবে না। বালির বদলে এক আশ্চর্য বিকল্প খুঁজে পেয়েছেন IISC-এর বিজ্ঞানীরা। বাড়ি-ঘর তৈরিতে এই নতুন আবিষ্কৃত উপাদানই বালির (Sand Replacement) বিকল্প হয়ে উঠবে বলে ধারণা দিয়েছেন গবেষকরা।


এখন দিন দিন প্রাকৃতিক বালি পাওয়া খুবই দুষ্কর হয়ে যাচ্ছে। আর তাই বালির বিকল্প উপাদান খুঁজতে উদ্যোগী হন বিজ্ঞানী-গবেষকরা। বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সের সাস্টেনেবল টেকনোলজিস বিভাগের গবেষকরা (Sand Replacement) খুঁজে বের করে আনা মাটি এবং কনস্ট্রাকশনের বর্জ্যের মধ্যে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফ্লু গ্যাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইডকে আলাদা করে সঞ্চয় করার একটা পথ খুঁজে পেয়েছেন। আর এভাবেই নির্মাণকার্যের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক বালির বিকল্প হয়ে উঠতে পারে এই কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস। আর এর ফলে একদিকে যেমন কনস্ট্রাকশন কাজের জন্য তৈরি হওয়া বর্জ্য যেমন পরিবেশ দূষণ ঘটাবে না, তেমনি কনস্ট্রাকশনে কাজে লাগে এমন উপাদানেরও ব্যবহার বাড়াবে। একটি বিবৃতিতে এমনই জানিয়েছে IISC-র গবেষকরা।


এই সংস্থার CST বিভাগের অহকারী অধ্যাপক সৌরদীপ গুপ্তার নেতৃত্বে একটি গোটা দল দেখিয়েছে কীভাবে মর্টারে কার্বন-ডাই-অক্সাইড দিয়ে জারিত কনস্ট্রাকশান বর্জ্যের সাহায্যে বালির বিকল্প তৈরি করা যায়। প্রথমে কার্বন ডাই অক্সাইড দিয়ে জারিত করার পর এটিকে কার্বন ডাই অক্সাইড নিয়ন্ত্রিত একটি জায়গার মধ্যে দিয়ে পাঠিয়ে তৈরি করা হবে বালির বিকল্প।


মুখ্য গবেষক সৌরদীপ গুপ্তা জানিয়েছেন, বাড়ি নির্মাণের জন্য লো-কার্বন ফেব্রিকেটেড উপাদান তৈরির কাজে কার্বন ডাই অক্সাইডের (Sand Replacement) এমন ব্যবহার পরবর্তীকালে একটি উন্নত শিল্প গড়ে তুলতে পারে। দেশ যেখানে কার্বন নির্মূলীকরণের পথে হাঁটছে, সেখানে এই পদ্ধতি দেশের পরিবেশের জন্য উপকারী হতে চলেছে।


এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উপাদানটি ২০-২২ শতাংশ সংকোচনক্ষম হয়ে উঠবে। এমনকী সৌরদীপ গুপ্তা তাঁর পরীক্ষাগারে নির্মাণকার্য স্থলে খুঁড়ে আনা মাটির মধ্যে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস প্রয়োগ করেও দেখে নিয়েছেন। আর সেই মাটিতে কার্বন ডাই অক্সাইড প্রয়োজন, সিমেন্ট কিংবা চুন-সুরকির থেকেও বেশি জমাট বাঁধছে। বেশি স্থায়িত্ব সম্পন্ন উপাদান গড়ে উঠছে। এতে যেমন সারফেস এরিয়া কমে, তেমনই ছিদ্রের আয়তনও কমে যায়, ফলে মাটির সঙ্গে চুনের বিক্রিয়ার হারও কমে যায়। এই কারণেই পরে একসঙ্গে অনেক পরিমাণে এই উপাদান তৈরিতে কোনও সমস্যা হবে না।


একটি সমীক্ষায়, গুপ্তার দল দেখেছে যে সিমেন্ট চুন ও মাটির মিশ্রণ নিয়ে পরীক্ষা করে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত সিমেন্টের ক্ষমতা বাড়ান সম্ভব হয়েছে। গবেষকদল দাবি করছেন যে, এই উপায়ে সিমেন্ট ও মাটির এই মিশ্রণ ব্যবহার করলে বালির প্রয়োজনীয়তা ৩০-৫০ শতাংশ কমে যেতে পারে। বর্তমানে এই উপাদান কীভাবে বাজারজাত করা যায়, সেই চেষ্টাই করছে গবেষকদল।


আরও পড়ুন: Viral Video: অটোর ভাড়া ৭ কোটি ! মজার ভিডিয়ো দেখে ক্ষমা চাইল উবার