কলকাতা: ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে এদেশের ধর্মের ইতিহাস, মন্দিরের ইতিহাস। তার পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে নানা লোককথা, নানা ইতিহাস, নানা বিশ্বাস। প্রতিটি মন্দিরও বিভিন্ন কারণে বিখ্যাত। এরই মধ্যে কোনও কোনও মন্দির ঘিরে রয়েছে নানা রহস্য-কথা। কেরলের পদ্মনাভস্বামী মন্দির (Padmanabhaswamy Temple in Kerala) তেমনই একটি মন্দির। 


এই মন্দিরটিকে ভারতের অন্যতম ধনী মন্দির বলে মনে করা হয়। এই মন্দিরে একাধিক রহস্য লুকিয়ে আছে বলে দাবি করা হয়, এই কারণে এই মন্দির নিয়ে প্রায়শই আলোচনা হয়। 


পদ্মনাভস্বামী মন্দিরের বিশেষত্ব:
কেরলের তিরুঅনন্তপুরমের পদ্মনাভস্বামী মন্দিরের সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হল এটিকে ভারতের সবচেয়ে ধনী মন্দির বলে মনে করা হয়। এই মন্দিরের কোষাগারে রয়েছে হিরে, সোনার অলঙ্কার এবং সোনার তৈরি মূর্তি। কথিত আছে যে এই মন্দিরে একাধিক কোষাগারে নিরাপদে কোটি কোটি অর্থমূল্যের সম্পদ রয়েছে। এই মন্দিরে স্থাপিত মহাবিষ্ণুর মূর্তি সোনার তৈরি। এই মূর্তিটির আনুমানিক মূল্য বিপুল। এ ছাড়া ভগবানের হাজার হাজার সোনার অলঙ্কার রয়েছে। শোনা যায়, একটি সোনার চেন রয়েছে যেটি ১৮ ফুট লম্বা। প্রভুর পর্দা নিজেই ৩৬ কিলোগ্রাম সোনা দিয়ে তৈরি। এমন নানা কারণেই এই মন্দিরটিকে ভারতের সবচেয়ে ধনী মন্দির বলা হয় (Padmanabhaswamy Temple Mystry)।


মন্দিরে ৭টি দরজা:
প্রচলিত তত্ত্ব অনুসারে এই মন্দিরের গোপন বেসমেন্টে রয়েছে প্রচুর সম্পদ (Asset of Padmanabhaswamy Temple)। এই মন্দিরে ৭ টি গোপন বেসমেন্ট রয়েছে এবং প্রতিটি বেসমেন্টের সাথে একটি দরজা রয়েছে। ২০১১ সালে সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে একের পর এক ছয়টি বেসমেন্ট খোলা হয়েছিল। যার মধ্যে মিলেছিল অজস্র ধনসম্পত্তি। দাবি করা হয়, মোট ১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের সোনা এবং হিরের গয়না এখানে পাওয়া গেছে, যা মন্দিরের ট্রাস্টের কাছে রাখা ছিল। 


সপ্তম দরজার ওপারে কী?
মন্দিরের ৬টি দরজা খোলার হলেও সাত নম্বর দরজা আর খোলা হয়ে ওঠেনি। সেই দরজা খোলা নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছিল। এই ঘটনায় যাওয়া হয় দেশের শীর্ষ আদালতে। সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে সপ্তম দরজা খোলার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বলা হয়, মন্দিরের সপ্তম দরজাটি কাঠের তৈরি। এই দরজায় একটি সাপের বিশাল মূর্তি খোদাই করা রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর দরজা খোলার চেষ্টা বন্ধ হয়ে যায়। প্রচলিত বিশ্বাস যে এই দরজাটি সর্প- স্বয়ং ভগবান বিষ্ণুর অবতার পাহারা দেয় এবং এই দরজাটি খুললে কোনও বড় বিপর্যয় ঘটতে পারে।


বিশেষ মন্ত্রে দ্বার খুলবে?
মন্দিরের সঙ্গে যুক্ত পুরোহিতরা বিশ্বাস করেন, নির্দিষ্ট কিছু মন্ত্র পাঠ করে মন্দিরের এই সপ্তম দরজাটি বন্ধ করা হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত কেউ তা খুলতে পারেননি। এই দরজাটি খুলতে, বিশেষ মন্ত্রগুলি একেবারে নির্ভুলভাবে পাঠ করতে হবে। দরজায় সাপের আকৃতি দেখে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে এটি নাগ-সংক্রান্ত বিশেষ মন্ত্র দিয়ে বাঁধা থাকতে পারে। গরুড় মন্ত্র জপ করে এটি খোলা যেতে পারে বলে মনে করা হয়। এটাও বিশ্বাস যে এই মন্ত্রগুলি এতটাই কঠিন এবং ভয়ঙ্কর যে সেগুলির উচ্চারণ বা ব্যবহারগত পদ্ধতিতে সামান্য ভুল মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। সাত নম্বর দরজাটি না খোলার এটাও একটা কারণ। তথ্যসূত্র: এবিপি লাইভ


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে। 


আরও পড়ুন: সরছে বুধ! শীঘ্রই ফুলেফেঁপে উঠবে ৪ রাশি! বাকিগুলিতে বিপদের আভাস?