কলম্বো: মাথার উপর গনগনে সূর্য নিয়েই নেমেছিলেন রাস্তায়। বাস, ট্রেন, লরি, যা পেয়েছেন, তাতে চেপেই চলে এসেছেন রাজধানীয় কলম্বোয় (Sri Lanka Crisis)। উদ্দেশ্য একটাই, প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দিন গোতাবায়া রাজাপক্ষ (Gotabaya Rajapaksa)। কিন্তু বাসভবনে তাঁকে না পেয়ে জিরিয়ে নিতে দেখা গেল বিক্ষোভকারীদের। গায়ে শুধু হাওয়া লাগানোই নয়, সুইমিং পুলে গা ডুবিয়ে ঠান্ডা হলেন তাঁরা। মুহূর্তের মধ্যে সেই ভিডিও ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
শ্রীলঙ্কায় আরও চরম বিক্ষোভ
তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কটের (Sri Lanka Economic Crisis) মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, চাল-ডালে টান পড়েছে গৃহস্থের। দাবি উঠছে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের ইস্তফার। অথচ পদ ছাড়তে এখনই রাজি নন তিনি। এমন পরিস্থিতিতে, শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় আছড়ে পড়েছে জনসমুদ্র। হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ মানুষ, বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজধানীতে এসে হাজির হয়েছেন।
শনিবার তাঁরা প্রেসিডেন্টের বাসভবনের উদ্দেশে রওনা দেন। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ পেরিয়ে, ব্যারিকেড ভেঙে ঢুকে পড়েন ভিতরে। কিন্তু সেখানে গোতাবায়ার দেখা পাননি তাঁরা। অগত্যা প্রেসিডেন্টের বসভবনেই জিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সকলে। সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, বাসভবনের উপরের বারান্দা, ছাদে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। নীচে সুইমিং পুলে সাঁতার কাটছেন বেশ কয়েক জন। তাঁদের ঘিরে রয়েছেন অনেকে। কেউ ছবি, ভিডিও তুলছেন, কেউ আবার সবুজে ঘেরা পুলের ধারে বসে হাওয়া খাচ্ছেন।
সুইমিং পুল থেকেও সরকার বিরোধী স্লোগান দিতে শোনা গিয়েছে বিক্ষোভকারীদের। তাঁদের বলতে শোনা যায়, ‘‘বাড়ি ফিরে যাও গোতা, বাড়ি ফিরে যাও।’’ শুধু সাদারণ মানুষই নন, সরকার বিরোধী বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন দেশের তাবড় তারকা, সেনা এবং পুলিশকর্মীরাও। তাঁদের একটাই দাবি, ভালয় ভালয় সরে যেতে হবে গোতাবায়াকে। শুধু তাই নয়, রাজাপক্ষ পরিবারকে দুর্নীতির টাকা ফেরত দিতে হবে বলেও দাবি তুলেছেন তাঁরা।
অর্থনৈতিক সঙ্কটে ধুঁকছে শ্রীলঙ্কা
তিন দিন আগেই নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা সরকার। আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে অর্থ সাহায্য চেয়েছে তারা। আপাতত ৩০০ কোটি জলার পেলে খাদ্যসঙ্কট সামাল দেওয়া সম্ভব বলে জানিয়েছে তারা। তার মধ্যেউ শনিবার বিক্ষোভ চরমে ওঠে। বিক্ষোভকারীদের আটকানোর চেষ্টা করে পুলিশ। কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়। করা হয় লাঠিচার্জও। ভিড় লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগও উঠেছে। সব মিলিয়ে দুই পুলিশ কর্মী-সহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে খবর।