নয়া দিল্লি: বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যর তালিকায় রয়েছে এর নাম। দেশ-বিদেশ থেকে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ পর্যটকরা আসে একটিবার এই অপরূপ আশ্চর্যর রূপ দেখতে। সূর্যোদয় কিংবা পূর্ণিমা, তাজমহল এক অবিস্মরণীয় ইমারত। তাজমহলকে মুঘল স্থাপত্যশৈলীর একটি আকর্ষণীয় নিদর্শন হিসেবে মনে করা হয়, যার নির্মাণশৈলীতে পারস্য, তুরস্ক, ভারতীয় এবং ইসলামী স্থাপত্যশিল্পের সম্মিলন ঘটানো হয়েছে।
১৯৮৩ সালে ইউনেস্কো বিশ্বঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়। তবে এর নামে মহল থাকলেও এটি কিন্তু আদতেও কোনও মহল নয়। বরং স্মৃতিসৌধ বলা যায়। স্ত্রী মুমতাজের প্রতি অপরিমেয় ভালোবাসার নিদর্শন স্বরূপ, তার মৃত্যুর পর সমাধিস্থলে সম্রাট শাহজাহান এই বিশাল এবং অপূর্ব স্থাপনাটি তৈরি করেন।
ইতিহাস জানায়, মুমতাজ ছিলেন শাহজাহানের দ্বিতীয় স্ত্রী। কোথাও কোথাও আবার মমতাজ সম্রাটের তৃতীয় এবং চতুর্থ স্ত্রী হিসেবেও উল্লেখ আছে। তবে তিনিই ছিলেন সম্রাট শাহজাহানের সব থেকে প্রিয়তমা স্ত্রী। ১৬৩১ সালে মাত্র ৩৮ বছর বয়সে ১৪ তম সন্তান জন্মদানের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে মুমতাজের মৃত্যু হয়। গোটা পৃথিবীর কাছে তাদের প্রেমের নিদর্শনস্বরূপ শত শত বছর যা থাকবে সেই ভাবনা থেকেই তাজমহল বানান শাহজাহান, এমনটাই বলা হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন, দুবাইয়ের রাস্তায় ইফতার বিকোচ্ছেন রোনাল্ডো-বেকহ্যাম! সঙ্গে একাধিক হলিউড তারকা
ভারতের উত্তর প্রদেশের আগ্রায় যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত। মুমতাজের মৃত্যুর প্রায় এক বছর পর ১৬৩২ সালে তাজমহল তৈরির মূল কাজ শুরু হয়। উল্লেখ্য যে, তাজমহলের সম্পূর্ণ স্থাপনাটির নকশা একক কোন মানুষের করা না। সম্রাট শাহজাহান তাজমহলের নকশা করার জন্য পৃথিবীর নানা প্রান্তের গুণী স্থপতিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তাজমহলের ঠিক মাঝখানে একটি কক্ষে মুমতাজের পাশেই কবর দেওয়া হয় শাহজাহানকেও।
তাজমহল নির্মাণে ২০ হাজার শ্রমিক এবং পণ্য পরিবহনের জন্য ১ হাজারেরও বেশি হাতির প্রায় ২০ বছর সময় লেগেছিল। প্রায় ১০০ ফুট উঁচু তাজমহলের প্রবেশ পথটি লাল রঙের বেলে পাথরের তৈরি। ইসলামিক ঐতিহ্য বজায় রাখতে এর তোরণে আরবি হরফে ক্যালিগ্রাফি আকারে লিখা আছে কোরআনের বানী। এর কেন্দ্রীয় গম্বুজটি ২৪০ ফুট (৭৩ মিটার) উঁচু। কেন্দ্রীয় গম্বুজের চারপাশে চারটি ছোটো গম্বুজ রয়েছে। মূল স্থাপনার চারপাশে আছে ১০৮ ফুট উচ্চতার চারটি মিনার।