কলকাতা: থাইল্যান্ডের কো সামুই দ্বীপের ওয়াট খুনারাম মন্দিরের শান্ত পরিবেশের মধ্যে সবথেকে আশ্চর্যজনক বিষয় হল এই ‘ধ্যানমগ্ন সন্ন্যাসী’। সন্ত লুয়াং ফো ডোয়েং-এর সংরক্ষিত দেহ যেটি কিনা একইভাবে ধ্যানমগ্ন আসনে বসে আছে দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে। এই সন্তকে অনেকে ডাং পিয়াসিলো নামেও চেনেন। আজ থেকে ৫০ বছরেরও বেশি আগে ৭৯ বছর বয়সে ঠিক এই ভাবেই ধ্যানমগ্ন অবস্থাতেই মৃত্যু হয়েছিল এই সন্তের। আর তাঁর এই মৃতদেহকেই প্রদর্শনী করে তুলেছেন স্থানীয়রা। কাচের কফিনের মধ্যে দিয়ে এই সন্তকে দেখা যায় এখনও ধ্যানরত থাকতে, চোখে তাঁর কালো চশমা, ভাল করে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে তাঁর শরীরে বাসা বেঁধেছে অসংখ্য কীট-পতঙ্গ, টিকটিকি।

Continues below advertisement

১৯৭৩ সালে পাওয়া গিয়েছিল লুয়াং ফো দোয়েং-এর মৃতদেহ। ধ্যানমগ্ন অবস্থায় পদ্মাসনে একটি কাচের আলমারিতে সেই মৃতদেহ আজও সংরক্ষিত। তীব্র জলশূন্যতা সত্ত্বেও ২০০০ সালের গোড়ার দিকে একটি রেডিওগ্রাফিক পরীক্ষায় দেখা গিয়েছিল যে তাঁর বেশিরভাগ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অক্ষত ছিল, কিন্তু সঙ্কুচিত হয়ে গিয়েছিল। দশকের পর দশক ধরে আভ্যন্তরীণ অঙ্গ এবং মস্তিষ্কের কোষ-কলা নাকি এখনও অক্ষত রয়েছে।

টিকটিকি ও অন্যান্য ছোট সরীসৃপ সন্ন্যাসীর মুখ, মাথার খুলি, গলা সহ সমস্ত গহ্বরে বাসা করে নিয়েছে এবং চামড়ার আস্তরণযুক্ত শুষ্ক ত্বকের নিচেই তারা ডিম পাড়ে। মন্দিরের দর্শনার্থীদের বিশেষত শিশুদের জন্য ভৌতিক পরিবেশ কমাতে সন্ন্যাসীরা লুয়াং ফো দায়েং-এর চোখের ফাঁকা অংশ সানগ্লাস দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন যাতে তাঁকে একটি প্রাণবন্ত এমনকী হাস্যকর চেহারা দেওয়া যায়।

Continues below advertisement

কে এই সন্ত লুয়াং ফো দায়েং

লুয়াং ফো দায়েং তাঁর নিজের মৃত্যুর পূর্বাভাস পেয়েছিলেন এবং অনুরোধ করেছিলেন যেন তাঁর দেহ প্রদর্শনীর জন্য রাখা হয়। এটি মনে করিয়ে দেওয়া হয় যে জীবন ক্ষণস্থায়ী এবং প্রতিটি মুহূর্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর এই সংরক্ষিত দেহের আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক মূল্য অনেক গভীর। অনেক স্থানীয় মনে করেন তাঁর উপস্থিতি পবিত্র এবং জীবনে সৌভাগ্য বয়ে আনে। তাই তাঁর কাছেই বিক্রি হয় লটারির টিকিট। বৌদ্ধধর্মের আচার-অনুষ্ঠান অনুসারে এই বৌদ্ধ ভিক্ষুকেও মৃত্যুর পরে মমি করে রাখা হয়েছে কঠোর ধ্যান প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যাতে তিনি দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করতে পারেন।