তুরস্কের পরিবহন মন্ত্রী আবদুল কাদির উরালোগলুকে একটি ভাইরাল ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে হাইওয়েতে উচ্চগতিতে গাড়ি চালানোর জন্য জরিমানা দিতে। কর্তৃপক্ষের তরফেই মন্ত্রীর উপরে জরিমানা আরোপ করা হয়েছে। সেই মন্ত্রী হাইওয়েতে ২২৫ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতিতে গাড়ি চালানোর একটি ভিডিয়ো ক্লিপ পোস্ট করেন, যা সেই হাইওয়েতে নির্ধারিত গতিসীমার থেকেও আইনত দ্বিগুণ বেশি। আর এই অপরাধে তাঁকে ট্রাফিক পুলিশ ২৮০ ডলার জরিমানা করেছে।
২৫ অগস্ট রবিবার আঙ্কারা নিগদে মহাসড়কে গাড়ি চালানোর ভিডিয়োটি শেয়ার করেছেন তুরস্কের পরিবহনমন্ত্রী উরালোগলু। লোকসঙ্গীত ও সরকারের ইনফ্রাস্ট্রাকচারের প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়িপ এরদোগানের ভাষণের কিছু অংশে মুগ্ধ হয়ে উরালোগলু গাড়িটি দ্রুত চালাতে থাকেন এবং আর গাড়িটি দ্রুত অন্য সমস্ত গাড়িকে ছাড়িয়ে অনেক দূর এগিয়ে যায়।
তুরস্কের ট্রাফিক পুলিশ জরিমানা করেছে পরিবহনমন্ত্রীকে
এই ভিডিয়োটি সাধারণ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে যার ফলে বেশ কয়েকজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ২২৫ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে গাড়ি চালানোর জন্য পরিবহন মন্ত্রীর সমালোচনা করেছেন। প্রশ্ন তুলেছেন যে একজন সরকারি কর্মকর্তা কি এই উদাহরণ স্থাপন করতে পারেন ? এই ভিডিয়োটি ট্রাফিক পুলিশের জন্যও সতর্কবার্তা জারি করেছে। তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারার ঠিক বাইরেই গতিসীমা লঙ্ঘনের অপরাধে পরিবহনমন্ত্রীর উপরে ৯২৬৭ লিরা অর্থাৎ ২৮০ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২৪ হাজার টাকা) জরিমানা আরোপ করেছে।
পরে একটি বিবৃতি জারি করে পরিবহনমন্ত্রী কর্তৃপক্ষ ও সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি স্বীকার করেছেন যে অজান্তেই তিনি গতিসীমা লঙ্ঘন করেছেন। আর ভুলের জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি। এখন থেকে গাড়ি চালানোর সময় আরও সতর্কতা অবলম্বনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘গতিসীমা মেনে চলা সকলের জন্য বাধ্যতামূলক। আমাদের হাইওয়ে জেন্ডারমেরি কর্তৃক প্রয়োজনীয় জরিমানা আরোপ করা হয়েছে। আমি সাধারণ মানুষকে জানাতে চাই যে এখন থেকে আমি আরও সতর্ক থাকব।’
এই ঘটনায় যদিও অনেক ব্যক্তি সেই মন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি তুলেছেন কারণ তিনি নিজেই মহাসড়কের নিয়ম বানিয়েই নিজেই সেই নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন। আবার কেউ কেউ বিদ্রুপ করেছেন যে তাঁকে কি কেউ বলে দেয়নি যে এরকম গতিসীমা লঙ্ঘনের ভিডিয়ো পোস্ট করলে জনমানসে নেতিবাচক আবহ দানা বাঁধতে পারে ! এই ঘটনাটি পরিবহনমন্ত্রীর উপরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, কিন্তু তুরস্কের আইন ও স্বাধীন কর্তৃপক্ষের শক্তির উপরে আলোকপাত করেছে। এমনকী এও দেখা গিয়েছে যে দেশের শীর্ষ আধিকারিকদের আচরণও আইনের অধীনে নিয়ন্ত্রিত।