UK Study: যুক্তরাজ্যের হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সির একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষায় আশঙ্কার খবর জানা গিয়েছে। রিপোর্ট অনুসারে সারা বিশ্বজুড়ে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে টাইফয়েড ও প্যারাটাইফয়েড রোগের প্রকোপ। ইংল্যান্ড, ওয়েলস, উত্তর আয়ারল্যান্ডে এই প্রকোপ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে ২০২৪ সালে এই সমস্ত দেশগুলিতে ৭০৪ জন আক্রান্তের খবর মিলেছিল, যা ২০২৩ সালের থেকেও ৮ শতাংশ বেশি।
এই রোগ হয় মূলত সালমোনেল্লা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে যা মূলত দূষিত খাবার ও জল থেকে ছড়ায়। বেশিরভাগ সংক্রমণই ঘটে ভারতের বাইরে। আরও আশঙ্কার ও দুশ্চিন্তার বিষয় হল পাকিস্তানের মত দেশগুলিতে টাইফয়েড রোগটি কোনও ওষুধের সেরে উঠছে না অর্থাৎ ড্রাগ-রেসিস্ট্যান্ট রোগের জীবাণু ছড়িয়ে পড়ছে ক্রমশ যা চিকিৎসা ব্যবস্থা সহ জনস্বাস্থ্যকে আরও ঝুঁকির মুখে ফেলছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদন অনুসারে, প্রতি বছর টাইফয়েড এবং প্যারাটাইফয়েড জ্বরে ১ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত হয় যার ফলে ১ লক্ষ ৩৩ হাজার জন মারা যান। এই রোগটি মূলত এশিয়া, আফ্রিকার স্কুলপড়ুয়া শিশুদের আক্রান্ত করে। উন্নত দেশগুলিতে প্রায়ই এই রোগকে উপেক্ষা করা হলেও এটি এখন একটি স্থায়ী ঝুঁকি বা হুমকি হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে এই আধুনিক আন্তঃসংযুক্ত বিশ্বে তা এক বড় ঝুঁকি।
২০২২ সালে প্রকাশিত গবেষণা ইঙ্গিত দেয় যে টাইফয়েডের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া সালমোনেল্লা এন্টেরিকা সেরোভার টাইফি ব্যাপকভাবে ওষুধ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে ফেলছে। উচ্চমাত্রায় প্রতিরোধী স্ট্রেনগুলি দ্রুত বদলে দিচ্ছে দুর্বল স্ট্রেনগুলিকে। বর্তমানে টাইফয়েডের একমাত্র কার্যকর চিকিৎসা হল অ্যান্টিবায়োটিক। তবে গত তিন দশক ধরে সাধারণভাবে ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি সালমোনেল্লা টাইফি ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্রমাগত বেড়ে গিয়েছে।
২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে নেপাল, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারত থেকে সংগৃহীত ৩৪৮৯টি এস টাইফি স্ট্রেনের জিনগত বৈশিষ্ট্য ও গঠন বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে যে ওষুধ-প্রতিরোধী টাইফির প্রকোপ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই স্ট্রেনগুলি অ্যাম্পিসিলিন, ক্লোরামফেনিকল এবং ট্রাইমেথোপ্রিম/সালফামেথোক্সাজোলের মতো পুরানো ফ্রন্টলাইন অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধেই প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে এমন নয়, বরং ফ্লুরোকুইনোলোন এবং তৃতীয় প্রজন্মের সেফালোস্পোরিনের মতো নতুন গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধেও ক্রমবর্ধমান প্রতিরোধ ক্ষমতা দেখাচ্ছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পূর্ব ও দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা সহ পশ্চিমা দেশগুলিতে টাইফয়েডকে সুপারবাগ হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এই বিশ্বব্যাপী বিস্তার ও বর্ধিত নজরদারি নতুন ও অভিনব চিকিৎসা কৌশলের প্রয়োজনীয়তা গড়ে তুলছে।